সমাজ পরিবর্তনের অন্যরকম এক গল্প ‘পরিক্রমা ফাউন্ডেশন’!

Center for Educational Research
7 min readJun 25, 2019

--

আজ আমি আপনাদের শোনাতে এসেছি গত ছয় বছরে সেবামূলক কর্মকান্ডে ও শিক্ষা ক্ষেত্রে আমার পথচলার গল্প। আমি কোনো প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একাডেমিক নই। অভিজ্ঞ কোনো সমাজকর্মীও নই। আমি ২৬ বছর ছিলাম কর্পোরেট জগতে। চেষ্টা করেছি, কিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাভজনক করে তোলা যায়। তারপর ২০০৩ সালে আমি চালু করলাম পরিক্রমা হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, আমার রান্নাঘরের টেবিলে বসে।

ফাউন্ডেশনের প্রথম কাজ হিসেবে আমরা বস্তিগুলোতে ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। আপনি হয়ত জানেন, প্রায় বিশ লক্ষ মানুষ বাস করে ব্যাঙ্গালোরের মোট আটশোটি বস্তিতে। আমরা সবগুলো বস্তিতে যেতে পারিনি, কিন্তু আমরা যদ্দুর পেরেছি তত বেশি সংখক বস্তিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা এসব বস্তিতে ঘুরে বেড়িয়েছি, এমন সব বাসা খুঁজে বের করেছি, যেখানে ছেলে-মেয়েরা কখনোই স্কুলে যেত না। আমরা বাবা-মায়েদের সাথে কথা বলেছি, তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আমরা বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করেছি, আর খুব ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছি। পরিশ্রান্ত, কিন্তু মনে গেঁথে ছিল কিছু ছবি, কিছু উজ্জ্বল মুখ, কিছু ঝলমলে চোখ। সেগুলো নিয়ে ঘুমাতে গেছি।

শুরু করার ব্যাপারে আমরা সবাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। কিন্তু সংখ্যাগুলো দেখে থমকে গেলাম। দুই কোটি শিশু, যাদের বয়স চার থেকে চৌদ্দ বছরের মধ্যে, যাদের স্কুলে যাওয়ার কথা, কিন্তু যায় না। দশ কোটি শিশু, যারা স্কুলে যাচ্ছে, কিন্তু পড়তে পারে না! সাড়ে বারো কোটি শিশু, সাধারণ অংক করতে পারে না! আমরা আরো শুনেছি যে, পঁচিশ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি সরকারী স্কুলগুলোর পেছনে বরাদ্দ ছিল। এর নব্বই শতাংশ খরচ হয় শিক্ষকদের আর কর্মচারীদের বেতন হিসেবে। এবং তারপরেও ভারতে কর্মক্ষেত্রে শিক্ষকদের অনুপস্থিতির হার পৃথিবীতে প্রায় সর্বোচ্চ। এখানে প্রতি চারজনে একজন শিক্ষক সারা বছরে একটি দিনের জন্যও কর্মক্ষেত্রে যান না।

এই পরিসংখ্যানগুলো একেবারে মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো। অভাবনীয়। আর আমাদেরকে প্রতিনিয়ত জিজ্ঞেস করা হয়েছে, আমরা কবে শুরু করব, কতগুলো স্কুল দিয়ে শুরু করব, কতজন বাচ্চা পাব ছাত্র হিসেবে, আমরা প্রতিষ্ঠানের আকার বাড়াব কিভাবে, আমরা অনেকগুলো স্কুল বানাব কিভাবে, ইত্যাদি। ওরকম অবস্থায় ঘাবড়ে না যাওয়া, ভয় না পাওয়া-ই অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু আমরা পাহাড়সম কাজে হাত নিলাম, এবং বললাম, “পরিসংখ‍্যান নিয়ে খেলাটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।” আমরা একবারে একটা শিশুর দায়িত্ব নেব। আমরা তাকে সরাসরি স্কুলে পড়াব, কলেজে পাঠাব। তাকে একটা সুন্দর জীবন আর সুন্দর জীবিকার জন‍্য প্রস্তুত করব।

এভাবে শুরু হলো আমাদের পরিক্রমার পথ চলা। পরিক্রমার প্রথম স্কুলটা ছিল একটা বস্তিতে। সেখানকার সত্তর হাজার অধিবাসী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। আমাদের প্রথম স্কুলটা ছিলো ওই বস্তির মধ্যে একটা বাড়ির ছাদের উপরে। বস্তির একমাত্র দোতলা বাড়ির ছাদে। আর সেই ছাদের উপরে কোনো পাকা ছাউনি ছিল না, শুধু ছিল অর্ধেকটা টিন শেড। সেটাই ছিল আমাদের প্রথম স্কুল। ছাত্রসংখ্যা ১৬৫ জন। ইন্ডিয়ায় শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় জুনে। আর জুন মাসে বৃষ্টি হয়। মাঝেমধ্যেই আমরা সবাই টিন শেডের নীচে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম, কখন বৃষ্টি শেষ হয় তার অপেক্ষায়। ও গড, সেটা ছিল একটা চমৎকার বন্ডিং এক্সারসাইজ! সেদিন আমরা যারা এক ছাদের নীচে দাঁড়িয়ে ছিলাম, আজও আমরা সবাই একসাথেই আছি। এরপর তৈরী হলো দ্বিতীয় স্কুলটা। তারপর তৃতীয়, চতুর্থ স্কুল, তারপর হল একটা জুনিয়র কলেজ। ছয় বছর পরে এখন আমাদের চারটা স্কুল আর একটা জুনিয়র কলেজ আছে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা এগারশ’ জন। এরা আটাশটি বস্তি আর চারটি এতিমখানা থেকে আসে । (তালি)

আমাদের স্বপ্নটা খুবই সাধারণ। এদের প্রত্যেকটা শিশুকে যেন স্কুলে পাঠাতে পারি, তৈরি করতে পারি — বাঁচার জন্য, শিক্ষিত হবার জন্য; এবং একই সাথে শান্তিতে বাঁচার জন্য, এখনকার এই যুদ্ধে ভরা বিশৃঙ্খল বিশ্বায়নের যুগে। ইদানিং, বিশ্বায়নের কথা বললেই ইংরেজির কথাও চলে আসবে। তাই আমাদের সবগুলো স্কুলই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। কিন্তু তারা জানে, একটা প্রচলিত ধারণা আছে যে, বস্তির ছেলে-মেয়েরা ভালো ইংরেজি বলতে পারে না। তাদের পরিবারে কেউ কখনো ইংরেজিতে কথা বলেনি। তাদের প্রজন্মে কেউ কখনো ইংরেজিতে কথা বলেনি। কিন্তু এই ধারনাটা যে কত ভুল!

(একটা ভিডিও দেখিয়ে)…আপনারা যে মেয়েটাকে দেখলেন, তার বাবা রাস্তার পাশে ফুল বিক্রি করে। আর এই ছেলেটা গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের স্কুলে আসছে। তবে মজার ব্যাপারটা কী দেখেছেন? পৃথিবীর সব ছোট ছেলেই দ্রুতগামী বাইক পছন্দ করে। ছেলেটা এখনো সেরকম বাইক দেখেনি, চড়েনি তো অবশ‍্যই, তবে গুগল সার্চের মাধ্যমে ও এটা নিয়ে অনেক গবেষণা করে ফেলেছে। আমরা যখন আমাদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো চালু করেছিলাম, আমরা বেছে নিয়েছিলাম সবচেয়ে সেরা কারিকুলামটি। আই সি এস ই কারিকুলাম। এবং এবারও, এমন অনেকেই ছিল, যারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল। বলেছিল, “তোমার কি মাথা খারাপ? এইসব ছেলে-মেয়ের জন্য এত কঠিন কারিকুলাম বেছে নিচ্ছ?” ওরা কখনোই পেরে উঠবে না।” আমাদের বাচ্চারা শুধু ভালোমত পেরেছে তাই নয়, তারা অসাধারণ হয়ে উঠেছে। আপনারা শুধু একবার এসে দেখে যান, আমাদের স্কুলের ছেলে-মেয়েরা কতখানি ভাল করছে।

আমাদের আরো একটা ভুল ধারনা আছে যে, বস্তির বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তারা শুধু চায় সন্তানদের দিয়ে কাজ করাতে। পুরো পৃথিবীজুড়ে সব বাবা-মাই চায় তাদের সন্তান যেন তাদের চাইতে ভালোভাবে জীবন-যাপন করে। তবে, তাদের বিশ্বাস করাতে হবে যে, পরিবর্তনটা আসলেই সম্ভব।

অভিভাবকদের আশি শতাংশ আমাদের সবগুলো শিক্ষক-অভিভাবক মিটিং-এ অংশগ্রহণ করেন। মাঝেমধ্যেই এটা একশ’ ভাগও হয়ে যায়। অনেক সুবিধাপ্রাপ্ত স্কুলগুলোর চেয়েও যা অনেক বেশি। বাবারাও আসতে শুরু করেছেন। মজার ব্যাপার হলো, প্রথমদিকে আমাদের স্কুলে বাবা-মায়েরা হাজিরা খাতায় বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিত। এখন তারা সেখানে তাদের নাম সই করা শুরু করেছে। বাচ্চারাই তাদের শিখিয়েছে। বাচ্চাদের শেখানোর ক্ষমতা আসলেই অসাধারণ।

এই কয়েক মাস আগেও, মানে গত বছরের শেষের দিকে, আমাদের কাছে কিছু সন্তানের মায়েরা এসে বললেন, “আমরা লেখা পড়া শিখতে চাই। আপনারা শেখাতে পারবেন?” আমরা স্কুলের পরে ক্লাস নেয়া শুরু করলাম অভিভাবকদের জন‍্য, মায়েদের জন‍্য। ২৫ জন মা নিয়মিত লেখাপড়া শিখতে আসেন আমাদের প্রাক-স্কুল শিক্ষা কার্যক্রমে। আমরা এই প্রোগ্রামটাও চালিয়ে যেতে চাই এবং আমাদের অন্যান্য স্কুলগুলোও চালু করতে চাই।

আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের বাবাদের আটানব্বই ভাগই মদ্যপ। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন, কত কষ্টকর এবং ভয়াবহ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে বেড়ে ওঠা শিশুরা আমাদের কাছে আসে। আমরা এই বাবাদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠাই। তারপর তারা যখন ফিরে আসে নেশামুক্ত হয়ে, আমরা তাদের একটা চাকরি দেয়ার চেষ্টা করি, যেন তারা আবার নেশার পথে ফিরে না যায়। আমাদের স্কুলে এরকম তিনজন বাবা আছেন, যাদের আমরা রান্নাবান্না শিখিয়েছি। আমরা তাদের পুষ্টি, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয় শিখিয়েছি। আমরা তাদেরকে রান্নাঘর বানাতে সাহায্য করেছি। এবং এখন তারা স্কুলে বাচ্চাদের খাবার সরবরাহ করে। তারাও কাজটা খুব ভালোমত করে, কারণ- তাদের বাচ্চারাই এই খাবারগুলো খাচ্ছে। কিন্তু সবচে’ বড় কথা হচ্ছে, জীবনে এই প্রথমবারের মতো তারা সম্মান পাচ্ছে। তারা এমন কিছু একটা করছে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষক ছাড়া আমাদের স্কুলের নব্বই ভাগ কর্মচারীই ছাত্রদেরই বাবা-মা অথবা পরিবারের সদস্য।আমরা অনেক প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি, বাচ্চারা যেনো স্কুলে আসে-এটা নিশ্চিত করার জন্যে। ছাত্রদের বড়ো ভাই-বোনদের জন্য আছে ভোকেশনাল ট্রেনিং, যাতে করে ছোটদের স্কুলে আসতে বাধা দেয়া না হয়।

আমাদের আরো একটা ভুল ধারনা আছে যে, এই ছেলে-মেয়েরা মূলধারার সাথে মিশে যেতে পারবে না। আপনারা এখন এই ছোট্ট মেয়েটাকে দেখুন (একটা ছবি দেখিয়ে)। মেয়েটা আটাশজন ছেলেমেয়ের একজন, যারা ডিউক ইউনিভার্সিটির ট্যালেন্ট আইডেনটিফিকেশন প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছিল। এখানে সে ছাড়া বাকি সবাই সুবিধাভোগী স্কুল থেকে আসা। তাদেরকে আহমেদাবাদের আই আই এম এ পাঠানো হয়েছিল। অংশ নেয়া স্কুলগুলো ছিল দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভাল স্কুল।

(আরেকটি ছবি দেখিয়ে), এই মেয়েটা একটি বাসায় কাজ করতো, স্কুলে পড়তে আসার আগে । আর আজ সে একজন নিউরোলজিস্ট হতে চায়।

আমাদের স্কুলের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলাতেও খুব ভালো করছে। ভাল থেকে আরো ভাল করছে। একটা ইন্টার স্কুল অ্যাথলেটিক কম্পিটিশন হয় প্রতি বছর ব্যাঙ্গালোরে, পাঁচ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এতে অংশ নেয় শহরের সেরা ১৪০ টা স্কুল থেকে। আমাদের স্কুল গত তিন বছর ধরে সেরা স্কুল-এর পুরস্কার পেয়ে আসছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা ঘরে ফিরছে ব্যাগ ভর্তি করে মেডেল নিয়ে, সাথে প্রচুর ভক্ত আর বন্ধুও তৈরি করছে। গত বছরেই কিছু বাচ্চা কয়েকটি অভিজাত স্কুল থেকে আমাদের স্কুলে অ্যাডমিশন নিতে এসেছিল। আমাদেরও নিজস্ব স্বপ্নের দল আছে।

এটা কিভাবে সম্ভব? এত আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে আসে? বহির্জগতের সাথে ওদের সাক্ষাতের কারনে? আমাদের কিছু প্রফেসর আছেন এম আই টি, বার্কলে, স্ট‍্যানফোর্ড থেকে এবং ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অভ সায়েন্স থেকে আসা। তাঁরা এখানে আসেন এবং আমাদের শিশুদের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, গবেষণা বিষয়ে শিক্ষা দেন, যা ক্লাসরুমের গন্ডির অনেক বাইরে। চিত্রশিল্প, সঙ্গিত কে ধরা হয় এখানে থেরাপি এবং ভাব প্রকাশের মাধ‍্যম হিসেবে। আমরা এও বিশ্বাস করি যে, ভেতরের জিনিসটাই হলো আসল। অবকাঠামো নয়, টয়লেট বা লাইব্রেরি নয়, স্কুলটাতে আসলে কী হচ্ছে, সেটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে মানুষ শিখতে পারবে, কারণ খুঁজে দেখতে পারবে, আবিষ্কার করতে পারবে, সেটাই সত্যিকারের শিক্ষা।

আমরা যখন পরিক্রমার কাজ শুরু করি, তখন নিজেরাও জানতাম না আমরা কোনদিকে যাচ্ছি। আমরা ব‍্যবসার পরিকল্পনা করার জন্য ম্যাকিনজি-কে হায়ার করিনি। তবে আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে, আজ আমরা যেটা চাই সেটা হল, একবারে একজন করে শিশুকে দিয়ে শুরু করা। সংখ্যা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না। আমরা আসলেই দেখতে চাই, শিশুটি তার পরিপূর্ণ জীবন চক্র সম্পূর্ণ করুক। এবং তার সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে বের করে আনুক। আমরা কোয়ান্টিটিতে বিশ্বাস করিনা, আমরা বিশ্বাস করি কোয়ালিটিতে। আকার এবং সংখ্যা বৃদ্ধি আপনা আপনিই হবে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন আমাদের সাহায্য করছে। আমরা এখন আরও অনেক স্কুল খুলতে সক্ষম। কিন্তু আমরা শুরু করেছিলাম এই চিন্তা থেকে যে, একবারে একটি করে শিশু।

(অন্য একটি ছবি দেখিয়ে), এই পাঁচ বছর বয়সের ছেলেটার নাম পরশুরাম। সে ভিক্ষা করত বাস স্টপের পাশে। সেখান থেকে ওকে একটি এতিমখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গত সাড়ে চার মাস ধরে ও আমাদের স্কুলে আসছে। ও এখন কিন্ডার গার্টেনে পড়ে। ইংরেজিতে কথা বলা শিখেছে। আমাদের একটা মডেল আছে, যার মাধ্যমে শিশুরা ইংরেজি বলতে পারে এবং বুঝতে পারে তিন মাসের মধ্যে। পরশুরাম আপনাদের ইংরেজিতে তৃষ্ণার্ত কাক, কুমির এবং জিরাফের গল্প বলতে পারবে। আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন সে কী করতে পছন্দ করে; ও বলবে, “আই লাইক স্লিপিং, আই লাইক ইটিং, আই লাইক প্লেয়িং।” এবং আপনি যদি ওকে জিজ্ঞেস করেন ‘ও কী করতে চায় তখন ‘ও বলবে, “আই ওয়ান্ট টু হর্সিং।” “হর্সিং” মানে ওর ভাষায় ঘোড়ার পিঠে চড়া।

আমি যখন পরিক্রমার কাজ শুরু করি, তখন আমার মধ্যে এক ধরণের ঔদ্ধত্য কাজ করছিল, যেন আমি পুরো পৃথিবীকে বদলে দেব। কিন্তু আজ আমি নিজেই বদলে গেছি। আমার ছেলে-মেয়েদের সাথে আমিও পাল্টে গেছি। আমি ওদের কাছ থেকে কত কিছু যে শিখেছি- ভালোবাসা, সহানুভূতি, কল্পনাশক্তি, আর এমন সৃজনশীলতা। পরশুরাম সবে পরিক্রমায় তার যাত্রা শুরু করেছে, কিন্তু এখনো অনেক পথ যেতে হবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, পরশুরাম আর কয়েক বছর পরে TED কনফারেন্সে আপনাদের সামনে কথা বলবে।

ধন্যবাদ।

(টেড টক-এ ‘পরিক্রমা ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা শুক্লা বোসের বক্তৃতা থেকে)

--

--

Center for Educational Research

CER is an independent research and policy nonprofit organization that discovers effective solutions to problems regarding education system of Bangladesh.