মেন্টর খুঁজবেন কিভাবে?

মোঃ আবু তাহের
Coder Ants
Published in
7 min readMar 6, 2019

আপনি কি ফেসবুক ইউটিউবে শত শত ভিডিও দেখে মোটিভেটেড? আপনি কি কাউকে খুঁজছেন যিনি আপনাকে গাইড করতে পারবে? তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।

ইনবক্সে প্রায়ই আমি একটা মেসেজ পাই, যার লেখা ভিন্ন হলেও কথা এক।

আমি “ক” শিখতে চাই, আপনি কি আমার মেন্টর হবেন?

“ক” হতে পারে ওয়েব ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ফ্রিল্যান্সিং, ডাটাবেজ, ডাটা এন্ট্রি সহ আরো অসংখ্য ব্যাপার। এর পর আসে ২য় ব্যাপার,

আমাকে সব হাতে কলমে দেখানো লাগবে না, শুধু একটু গাইড করলেই চলবে। সপ্তাহে আধা ঘন্টা সময় দিলেই চলবে।

এতদিন হ্যা বলে আসলেও বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার পর এখন প্রায়ই সবাইকে নিষেধ করি। শুধু আমি না, অনেক বড়ভাইদেরকেও একই কাজ করতে দেখেছি। আজকাল সবাই নিষেধ করে।

তাহলে মেন্টর খুঁজবেন কিভাবে যদি কেউই না শেখাতে রাজি হয়? যদি কেউই গাইড না করতে চায়? 😱

এমন না যে আমি মানুষকে হেল্প করতে চাই না। আমি মানুষকে সাহায্য করতে ভালোবাসি। অনেককেই হাতে কলমে অনেক কিছু দেখিয়েছি, ব্লগ পোস্ট লিখেছি, গ্রুপগুলোতে কমেন্ট করেছি, ভিডিও কলে এসে দেখিয়েছি, বাস্তবে পাশে বসিয়ে বুঝিয়েছি। মানুষকে আমি প্রতিদিনই সাহায্য করি।

কিন্তু তারপরও না বলা শুরু করেছি একটা কারণে, “আমাকে কি শেখাতে পারবেন?”, এই প্রশ্নটা খুব বড় আবদার হয় আমার সময় ও মানসিক শক্তির জন্য। এর মানে এই নয় যে আমি খুব ব্যস্ত কিংবা মানসিকভাবে দূর্বল।

যখন কেউ আমাকে মেন্টর হতে বলে তখন আমি ভাবা শুরু করি, “সে আমার কাছে কত সময় চাচ্ছে? সে আমার কাছে কি চায়? যদি তাদেরকে সময় দিই এবং গাইড করি কিন্তু যদি সে তার লক্ষ্যে না পৌছায় তখন কি হবে? আমি কি ঠিকভাবে শেখাতে পারবো? সে কি সময় ও শ্রম দিবে নাকি বাকি সবার মত সেও একইভাবে দুইদিন পর গায়েব হয়ে যাবে?”

মানুষ শেখানোর জন্য আমাকে টাকাও দিতে চাইসে। কিন্তু আমি সেটা বারণ করেছি, বলেছি টাকা দিয়ে যেই শেখাটা হবে সেটায় “শেখার প্রতি ভালোবাসা” থাকবে না। উনাদের বিভিন্ন বড় ভাইয়ের ব্লগ ও ভিডিওর দিকে পাঠিয়ে দিয়েছি।

মেন্টরশীপ কি জিনিস? মেন্টর মানে কি?

যদিও আমি অনেককেই নিষেধ করেছি। তারপরও আমি অনেককেই আসলে গাইড করেছি বা করতে চেয়েছি। শেখানোর পদ্ধতিতে হয়তো ভুল ছিলো, হয়তো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবগুলো উপায় ঠিক হয়নি।

একজন আমাকে ফেসবুকে লিখেছিলো, “আপনি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন, আজ আপনি না থাকলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না।”

সে আমাকে কখনোই তাকে শেখাতে বলে নাই। ফেসবুকে পরিচয় হবার পর ওকে আমি শুধু এটা কিভাবে করতে হবে, ওটা কিভাবে করতে হবে এইসব বলে দিতাম। সে কোন ব্যাপারে আটকে গেলে আমাকে প্রশ্ন করতো, আমি সলুশন করে দিতাম।

এখন ভেবে দেখি, আসলে এমন ঘটনা অনেক ঘটেছে। অনেককেই আমি কোন রকম গাইড করিনি, কিন্তু দিনশেষে আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছে। আবার অনেককেই গাইড করতে গিয়ে একদম বিরক্ত হয়ে ফেসবুকই ডিএকটিভেট করে দিতাম। কারণ দেখা যেত কাজে মন দিতে পারি না, আর তাদেরকে কিছু শিখতে বললে তারা সময়মত সেটা করে না।

এখন প্রসঙ্গে আসি। মেন্টরশীপ জিনিসটা আসলে কি?

মেন্টরশীপ হলো সম্পর্ক তৈরি করা। মেন্টরশীপ মানে হলো এমন সব মানুষকে দিয়ে নিজেকে ঘিরে ফেলা যারা আমাকে শিখতে ও উপরে উঠতে সাহায্য করবে।

আপনাকে কেউ কি শিখতে সাহায্য করেছে? আপনি কি কারো কারণে আজ উপরে উঠেছেন? তাহলে সে আপনার মেন্টর।

কিভাবে মেন্টর খুঁজবেন না?

এমন অনেক স্টুডেন্ট আমার কাছে এসেছিলো যাদের শেখার ইচ্ছা প্রবল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয় সে হাল ছেড়ে দিয়েছে আর নাহলে আমি। কোন একটা বিশেষ কারনে আমাদের সম্পর্ক টিকেনি।

কয়েকটি ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে মেন্টর খোঁজার সময়।

কাউকে আপনাকে মেন্টর হতে বলবেন না। যেটা আগে বললাম, আপনি যখন কাউকে বলবেন “আপনি কি আমার মেন্টর হবেন?”, তখন সেটার মানে বোঝায় আপনি তার কাছ থেকে একটা কমিটমেন্ট নিয়ে নিচ্ছেন। তার মূল্যবান সময় ও শ্রম আপনার দিকে দেবার জন্য বলতেসেন।

এমনটা হলে প্রায়ই আপনাকে বিফল ও হতাশ হতে হবে। কারণ এই ব্যস্ত দুনিয়ায় কেউই কারো জন্য বিনা লাভে কিছু করতে চাইবে না। হয়তো লাখে দুই একজন পেতে পারেন।

ট্রেইনিং সেন্টারের উপর ভরশা করে থাকবেন না। চিন্তা করে দেখুন, হয়তো আপনি টাকা দিতেছেন বলে আপনার নিজেরও আগ্রহ থাকবে কিছু শেখার জন্য, আর যারা শেখাতে চাচ্ছে তারা শেখাবে টাকার জন্য। বাংলাদেশে এইটা খুব বেশি চলে এবং এইসব ট্রেনিং সেন্টার হতে বের হয়েও আপনার স্কিল নিয়ে আপনার প্রশ্ন থেকে যায়।

টাকার কাজ শেষ ত আপনাদের সম্পর্কও প্রায় শেষ, তারা মন দিবে নতুন স্টুডেন্টদের প্রতি। হয়তো হাজারে একটা বা দুইটা পেতে পারেন যারা আসলেই আপনাকে সেভাবে টাকা দিয়ে মূল্যায়ন করবে না।

সবচেয়ে সেরা মেন্টরশীপ তখনই হয় যখন আপনি এমন সব মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করবেন যারা আপনাকে শেখানোর জন্য স্বেচ্ছায় সময় ও পরিশ্রম দিতে রাজি হবে। ওইযে বললাম, হাজারে একটা বা দুইটা পেতে পারেন। হয়তো তার সাথে সব ব্যাপারে একমত নাও হতে পারেন, কিন্তু সময় ও পরিশ্রম যখন আপনিও দিবেন, সেও দিবে, তখন তার ফলাফল একদম ভিন্ন হবে।

কিভাবে মেন্টর খুঁজবেন?

মেন্টর খোঁজা আসলেই খুব সহজ। শুধু এমন একজন বা দুইজন খুঁজে বের করে যারা আপনাকে শিখতে সাহায্য করবে।

জাস্ট অতটুকুই।

১। উনাকে খুঁজে পাবেন গ্রুপ চ্যাটে, ভিডিওতে, কোন কমেন্টে, মিটআপে, রাস্তা ঘাটে, ফ্রেন্ডের মাধ্যমে ইত্যাদি। চাইলে ত বাঘের চোখও নাকি পাওয়া যায়, মেন্টর পাবেন না সেটা কিভাবে হয়?

২। পাবার পর উনার সাথে পরিচিত হবার চেষ্টা করেন। উনার সম্পর্কে একটু ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন। কাজ সম্পর্কিত দুই চারটা প্রশ্ন করুন, নিজের মতামত জানান। একটা দুইটা প্রশ্ন করার পর যে উত্তর পাবেন, সেটার উপর ভিত্তি করে পরে আবার প্রশ্ন করুন।

এমন না যে কোন নির্দিষ্ট এক বস্তা প্রশ্ন আগে থেকে বানিয়ে রাখতে হবে। কথার মত করে কথা বলুন। বেশিরভাগ মানুষই খুশি হয় যখন আপনি তাদের ভালোমন্দ প্রশ্ন করেন এবং তাদের কথা ঠিকমত শোনার চেষ্টা করেন।

প্রশ্ন করা ও উত্তর মন দিয়ে শোনা, এই সহজ পদ্ধতিই হলো কারো সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরির অসাধারণ একটা উপায়।

কারো সাথে সম্পর্ক একটু ভালো হলে তাকে নির্দিষ্ট প্রশ্ন করা শুরু করতে পারেন।

ধরেন আপনি জানতে চাচ্ছেন কিভাবে মেয়েদের জন্য একটা সুন্দর রং ও প্যাটার্নের সিএসএস স্টাইল করতে পারবেন। উনাকে প্রশ্ন করতে পারেন উনি হলে কিভাবে এই জিনিসটা করতো, কিংবা কোন রংটি বাছাই করতো, কেন অন্যটা না।

উনার উত্তর পাবার পর যা শিখেছেন সেটা কাজে লাগান। কাজে লাগানোর পর উনাকে পরবর্তীতে জানান উনার উত্তরটি আপনি কিভাবে কাজে লাগিয়েছেন এবং কিভাবে কি হলো।

নিয়মিত যোগাযোগ রাখা উচিৎ। তাহলে উনিও আপনার সাথে সেভাবে সম্পর্ক তৈরি করবে। শুধু নিজের কাজ হাসিল, ওস্তাদ বাতিল এই মানসিকতা থাকলে কখনোই কিছু করতে পারবেন না।

আপনার বস আপনার মেন্টর না

হয়তো আপনি অনেককেই মেন্টর ভেবে বসে আছেন যারা মোটেও আপনার মেন্টর না।

উনি আপনার মেন্টর না। বন্ধু আর বাবা, দুইজনের মধ্যে কার সাথে আপনি মন খুলে কথা বলতে ও কাজ করতে পারবেন? নিশ্চয়ই বেশিরভাগ সময় আপনার বন্ধু।

বস মানুষ হলো ম্যানেজারের মত। তাদের সাথে অনেক সময় অনেক কিছু শেয়ার করলে আপনার হিতে বিপরীত হতে পারে। মেন্টরের সাথে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন যেটা আপনার বসের সাথে করতে পারবেন না।

বসের কাছ থেকে শেখা ভালো, মেন্টরের কাছ থেকেও শেখা ভালো। শুধু মাথায় রাখতে হবে দুইটা এক জিনিস না।

যদি এমন হয় যে মেন্টর শেষ পর্যন্ত বস, কিংবা বস শেষ পর্যন্ত মেন্টর হয়ে গিয়েছে। তাহলে ভিন্ন কথা। তবে সেক্ষেত্রেও কখন কোন ব্যাপারে কিভাবে কথা বলতেসেন সেটা খুব ভালোভাবে মাথায় রেখে এগুতে হবে। যারা এই দুইটা একসাথে হবে, বস ও মেন্টর, এই পরিচয় খাঁটে তাদের জন্য।

মেন্টরশীপ নিয়ে আমার শিক্ষা

এই ছোট জীবনে অনেক কিছু অনেকের কাছ থেকেই শিখেছি। সবাই আমার মেন্টর, তারা না জেনেই আমার মেন্টর হয়ে গিয়েছে। :)

শিক্ষাঃ ক্লায়েন্টের সুবিধার জন্য নিজেকে মেরে ফেললে নিজেরই ক্ষতি

এইত ওইদিন কিভাবে একটা বাহিরের ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল করবো সেটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলো। আমাকে অনেক বিষয় বুঝানোর পর, সব রকম জিনিস দেখার পর উনি আমার কোথায় ঘাটতি আছে সেটা বুঝতে পেরে win without pitching manifesto বইটা সাজেস্ট করলেন। ওটা পড়ে অনেক কিছু নতুন করে শিখতে পারলাম।

শিক্ষাঃ কাজ ও জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে

অনেক সময় অনেক কোম্পানী আপনাকে বলদের মত খাটাবে। সকাল বিকাল দুপুর রাত, সাপ্তাহিক ছুটি, কোন কিছুই বাদ যাবে না। এমন যদি হয় তাহলে কাজ ও জীবনের মধ্যে একটা ব্যালেন্স থাকার কথা সেটা থাকবে না কোনভাবেই। তাই যদি কেউ আমাকে একদম অযৌক্তিক সময়ে অনেক বড় কাজ করতে বলে তাহলে আমি তাকে বলবো “এই টা করতে গেলে আমি ওইটা করতে পারবো না। কোনটা প্রায়োরিটি দিবো সেটা বলে দিলে ভালো হয়।

হয়তো এই ব্যাপারটা ওই কোম্পানীর জন্য কোন সমস্যা না, কিন্তু আমি অন্য কোম্পানীতে বা টিমের সাথে কাজ করতে গেলে সেটা আমার উপর বড় ধরনের সমস্যা নিয়ে আসবে। এমনও হতে পারে কাজ করতে করতে আমি নিজের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা তৈরি করে ফেললেও কোম্পানী কোন কিছুই করবে না কারণ তারা যদি কেয়ার করতো তাহলে আমাকে ওইসব অযৌক্তিক কাজ কখনোই দিতো না।

শিক্ষাঃ সবাই শেখার প্রতি মনযোগ দিবে না

সবাই বলবে শেখানোর জন্য কিন্তু দিন শেষে আপনিই তাদের সব না। যদি কোন রকম পিছুটান না থাকে, তাহলে আপনি যত চেষ্টাই করেন না কেন, তারা দিনশেষে তাদের নিজেদের প্রয়োজনকে আগে চিন্তা করবে। তারা সময়মত আপডেট দিবে না, এক জিনিস কয়েকবার বোঝালেও ভুলে যাবে, সকালের জিনিস রাতে করবে, রাতের জিনিস সকালে ইত্যাদি।

মেন্টরশীপ জটিল কিছু না

আমি এখন মেন্টরশীপ এর ব্যাপারে নতুন কিছু শিখেছি। এই পুরো পোস্ট লেখার আগে আমি রিসার্চ করেছিলাম কিভাবে কেউ মেন্টর হতে বললে নিষেধ করবো, কিভাবে সম্পর্ক বজায় রাখবো, কোথায় কোথায় ভুল হয়েছে, বাকিরা কিভাবে এই ব্যাপারটা সামাল দিচ্ছে ইত্যাদি।

আমি যখন বড় ভাইদের দেখি এবং তাদের কাছ হতে কিছু শিখতে চাই, তখন আমি কখনোই উনাদের বলি না “ভাই এইটা শেখান ওইটা শেখান”। আমি উনাদের বলি “ভাই দেখা করলে ভালো হতো”, প্রশ্ন করি ছোটখাটো ব্যাপারে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক ব্যাপারে আলোচনা করি।

উনাদের সাথে কথা বলে অনেক কিছু শিখতে পারি। উনাদের মতামতকে বিশ্লেষন করে দেখি। হয়তো অনেক নতুন কিছু শিখতে পারি কিংবা পাল্টা আরেকটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে আরো নতুন কিছু শিখতে পারি।

এখন হতে যখনই আপনি মেন্টর খুঁজবেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন “আমাকে কি শেখাবেন?” টাইপের প্রশ্ন এড়িয়ে চলতে। সেটা না করে চেষ্টা করুন এমন কাউকে খুঁজতে যার কাজ দেখে আপনার ভালো লেগেছে, উনাদের ভালো প্রশ্ন করুন, সম্পর্ক তৈরি করুন, শুনুন, দেখুন, মানুন। এমন অনেক কিছু শিখতে পারবেন যেটা হয়তো কখনো ভেবেও দেখেননি।

এই পোস্ট লেখার সময় আমি Jessica IvinsLindsay Kolowich এর পোস্ট হতে প্রায় হুবহু অনেক তথ্য নিয়েছি কারণ আমার ছোট মাথায় এত সুন্দর সুন্দর কথা আসার কথা না। আর ধন্যবাদ ৪০-৫০ জন স্টুডেন্ট যারা আমাকে বিগত কয়েক বছরে অনেক নতুন কিছু শিখিয়েছে ও এই পোস্ট লিখতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। নতুন কিছু শিখে সেটা কাজে না লাগালে হলো?

এইসব পড়ে আপনার ভালো লাগলে আমার টুইটার আছে আপনাদের জন্য। আবার হাজির হবো অন্য কোন পোস্ট নিয়ে। ভালো থাকবেন।

--

--

মোঃ আবু তাহের
Coder Ants

প্রোগ্রামিং জগতে ঘুরি ফিরি। শিখতে ও শিখাতে ভালোবাসি।