ফিটস’ সূত্র ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন

Shad Iqbal
ডিজাইন বাংলা
3 min readJan 22, 2018

১৯৫৪ সালে সাইকোলজিস্ট পল ফিটস মানব পেশী সঞ্চালনতন্ত্র নিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে দেখান যে, কোন লক্ষ্যবস্তুতে পৌছাতে যে সময় লাগছে তা নির্ভর করছে লক্ষ্যবস্তুটির দূরত্বের উপরে এবং তার আকৃতির ব্যস্তানুপাতিক ভাবে। তার সূত্রানুযায়ী, বেশি দূরত্বের এবং ছোট আকৃতির লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্রে ভুলের হার বেশি হয় এবং সময়ও বেশি লাগে। অন্যদিকে কাছে অবস্থিত বড় আকৃতির লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্রে বিপরীত ফলাফল পাওয়া যায়।

ফিটস’ সূত্রের সাধারণ ধারণাঃ একটি লক্ষ্যবস্তুতে পৌছাতে ব্যবহারকারীর কত সময় লাগবে তা নির্ভর করে (পয়েন্টিং ডিভাইস হতে) লক্ষ্যবস্তুটির দূরত্ব এবং তার আকৃতির উপরে।

ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এবং ইউজার ইন্টারফেস — ডিজাইনের দুটি ক্ষেত্রেই ফিটস সূত্র ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে বাটন (বিশেষ করে টাচ মোবাইল ডিভাইসে) ডিজাইনের ক্ষেত্রে তার অবস্থান এবং সাইজ কেমন হবে তা ফিটসের সূত্র দিয়ে নির্ধারণ করা যেতে পারে। লক্ষ্যণীয় যে, ছোট আকৃতির বাটনে ক্লিক করা অপেক্ষাকৃত বেশি কঠিন এবং সময় সাপেক্ষও বটে। একইভাবে ইউজারের টাস্ক এরিয়া বা লক্ষ্যবস্তু থেকে ঐ টাস্ক সম্পর্কিত বাটনের দূরত্ব যতসম্ভব কম হওয়া উচিৎ।

উইন্ডোজ এবং ম্যাকের (pre OSX Lion) স্ক্রলবারের উদাহরণ দেয়া যাক। উইন্ডোজ স্ক্রলবারের দুপাশে লেফট অ্যারো আর রাইট অ্যারো রয়েছে আর অন্যদিকে ম্যাকের অ্যারোগুলো স্ক্রলবারের একদিকে পাশাপাশি। উইন্ডোজে ডানের জন্য ডান আর বামের জন্য বাম মেন্টাল মডেল মেনে চলা হয়েছে। ম্যাক সেটা না করে অ্যারোগুলো পাশাপাশী রেখছে কারণ ফিটস’ সূত্রানুযায়ী এভাবে নেভিগেট করা দ্রুততর হয়।

ফিটস’ সূত্রের গাণিতিক প্রয়োগঃ MT=a + b * log2(D/W + 1)

যেখানে MT হলো (এক বিন্দু থেকে আরেক বিন্দুতে যাবার) মুভমেন্ট টাইম, a এবং b হল ইনপুট ডিভাইস নির্ভর ধ্রুবক যাদেরকে যথাক্রমে “ইন্টারসেপ্ট” এবং “স্লোপ” বলা হচ্ছে । এদের মান রিগ্রেশন এনালাইসিসের মাধ্যমে বের করা হয় এবং তা নির্ভর করবে ID বা ইনডেক্স অব ডিফিকাল্টি এর উপরে। অন্যদিকে D হল উৎস থেকে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব এবং W হল লক্ষ্যবস্তুর প্রস্থ। এই সূত্রের মাধ্যমে MT বের করা একটু কঠিন মনে হতে পারে। কেননা স্থান-কাল-পাত্র ভেদে a এবং b এর মান পরিবর্তিত হতে থাকে।

এরচেয়ে R(extreme) = Log(2 A1 / W) / Log(2 A2 / W) এর মাধ্যমে আনুপাতিক হার বের করা তুলনামূলক সহজ।

ফিটস’ সূত্রের জন্য বেশ কিছু অ্যাপলিকেশন রয়েছে। যেমন, ভিজ্যুয়ালাইজিং ফিটস, ক্যালকুলেশনের জন্য একটি ওয়েবসাইট হল ফিটস’ ল ফর্মুলেশন এবং এক্সপেরিমেন্টের জন্য — এক্সপেরিমেন্ট ফিটস’

তাহলে কি মানে দাঁড়াচ্ছে? যত বড় তত ভাল?

না, ফিটস’ সূত্র বিভিন্ন ভাবে ইউজার এক্সপেরিয়েন্সে প্রভাব ফেলতে পারে কিন্তু অপ্টিমাম ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের জন্য এটাই একমাত্র প্রভাবক নয়। বরং এর পাশাপশি গেস্টাল্ট তত্ত্ব, সিমেট্রি এবং ডিজাইনের অন্যান্য নীতিগুলোর প্রয়োগ সর্বোত্তম ফলাফল দেবে।

আর সবচেয়ে বড় বিষয় হল, আশানুরূপ ইমপ্যাক্টের জন্য ইউজার টেস্টিং এর কোন বিকল্প নেই।

--

--

Shad Iqbal
ডিজাইন বাংলা

UX Lead at 10 Minute School, Contributor at UX Bangladesh, Focusing on edtech, user research, product psychology, UX strategy and design ops