ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে কিছু কথা

Nuruzzaman Milon
milon
Published in
2 min readAug 18, 2012

আজকে যদি আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যেত তাহলে আগামীকাল হত ঈদুল ফিতর। আসলে চাঁদ দেখার সাথে সাথেই ঈদ শুরু হয়ে যায়, কারন হিজরী দিন শুরু হয় সূর্যাস্ত থেকে, যেমন ইংরেজি তারিখ শুরু হয় রাত ১২ টা থেকে, বাংলা তারিখ শুরু হয় সূর্যোদয় থেকে।
কিন্তু আজকে বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যাবে না এটা আমি জানতাম। আসলে কবে আকাশে চাঁদ দেখা যাবে আর কবে যাবে না এটা নির্ভর করে পৃথিবীর সাথে চাঁদের অবস্থান আর সূর্যের আলো চাঁদের উপর কতটুকু পড়ে তার উপর। জ্যোতির্বিজ্ঞান আমাদেরকে বলে দিতে পারে, কবে পৃথিবীর কোন জায়গার আকাশে চাঁদ দেখা যাবে আর কোথায় কোথায় দেখা যাবে না।
আসলে আজকে আমাদের দেশের আকাশে চাঁদ ছিল, কিন্তু তা আমরা খালি চোখে দেখতে পারি নি। এর কারন সাধারনত চাঁদ যদি দিগন্তরেখার ১০ ডিগ্রি বা তার উপরে থাকে তাহলে আমরা খালি চোখে তা দেখতে পারি, তবে তার জন্য চাঁদের কমপক্ষে ৪ শতাংশ জায়গায় সূর্যের আলো পড়তে হবে। কিন্তু আজ আমাদের দেশের আকাশে চাঁদ ছিল দিগন্ত রেখার মাত্র ২ ডিগ্রি উপরে আর চাঁদের ২ শতাংশে মাত্র সূর্যের আলো পড়েছিল। তাই আমরা চাঁদ দেখতে পাই নি। আগামীকাল কিন্তু আমরা ঠিকই চাঁদ দেখবো, এবং কালকে বাংলাদেশের আকাশে চাঁদে প্রায় ১ ঘন্টা ১০ মিনিট ধরে দেখা যাবে, কালকে চাঁদ অবস্থান করবে দিগন্তরেখার ১১ ডিগ্রি উপরে।
একইভাবে বলে দেয়া যায় কবে ঈদুল আযহা হবে। কোরবানীর ঈদ হবে অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখ।

একটা জিনিস লক্ষ করলে আমরা দেখবো, আমাদের দেশে প্রতিবছর আমাদের দেশে ঈদ হয় সৌদি আরবের ১ দিন পর অথচ সৌদি আরবের সাথে আমাদের সময়ের পার্থক্য মাত্র তিন ঘন্টা। সে হিসেবে আমেরিকার ৪ দিন পর আমাদের ঈদ হওয়ার কথা কারন সময়ের পার্থক্য প্রায় ১২ ঘন্টা কিন্তু ঈদ হয় ২ দিন পর। এর কারনও কিন্তু চাঁদের অবস্থানের উপরেই লুকিয়ে আছে। আপনারা যদি ভয়েজার স্কাই গ্যাজার বা গুগোল স্কাই ম্যাপ ব্যবহার করেন তাহলে এই বিষয়গুলো একদমই পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ কারনেই হিজরী বছর ৩৫৫ দিনে হয়, ৩৫৪ বা ৩৫৭ দিনে না। মাঝে মাঝে অবশ্য ৩৫৬ দিনে হয় এর কারনও কিন্তু চাঁদ-সূর্যের অব্স্থানের উপরেই নির্ভর করছে। লিপ ইয়ার যে কারনে হয় হিজরী সনও সে কারনেই ৩৫৬ দিনে হয়।

আমার লেখায় কিছুটা ভুল থাকতে পারে, কারন এর বেশিরভাগই স্মৃতি থেকে লেখা। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে এবং ধরিয়ে দিলে খুশি হবো।

এই টপিকের কৃতজ্ঞতা অনুসন্ধিৎসু চক্র বিজ্ঞান সংগঠনের নাইমুল ইসলাম অপু ভাইয়ের কাছে যিনি আমাকে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলেছেন এবং প্রয়াত ভাষাবিদ ড. হুমায়ূন আজাদের প্রতি যার বই পড়ে আমি এই সব হিসাব-নিকাশ শিখেছি।

--

--