নেদারল্যান্ডস এর এদিক সেদিক

আমস্টারডাম — ডেন হেল্ডার — ডেন হেগ — রটারডাম

Nowshad
tripsharebd
10 min readDec 31, 2019

--

দিনঃ ১

আমার শহর কোলন থেকে সবচেয়ে কাছের দেশ হচ্ছে নেদারল্যান্ডস। অনেকদিন থেকেই যাব যাব করে শেষমেশ বড়দিনের বন্ধে অন্য কোন প্ল্যান না থাকায়, ডিসেম্বরের ২৫ সকাল সকাল ফ্লিক্সবাসে চড়ে বসলাম। এই ট্রিপের বিশেষ কোন সাজানো-গোছানো প্ল্যান নেই আমার। দুই শহরে দুই বড়ভাই আছে, তাদের সাথে থাকবো আর এদিক সেদিক ঘুরবো এইরকম একটা রাফ আইডিয়া নিয়েই যাত্রা।

নেদারল্যান্ডস পৃথিবীর সবচেয়ে সমতল দেশগুলোর মধ্যে একটা এবং এই জিনিসটা বাস জার্মান বর্ডার পেরিয়ে নেদারল্যান্ডস ঢুকার সাথে সাথেই টের পেলাম। রাস্তার দুইধারে সমতল সবুজ মাঠ আর ক্ষেত। এই সমতল দেখতে দেখতেই দুপুর নাগাদ পৌঁছে গেলাম আমস্টারডামে। এখানের ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম বেশ ব্যয়বহুল হলেও চিপ কার্ড ব্যবহার করে যেকোন যান-বাহনের চেক-ইন চেক-আউটের বেপারটা বেশ ভাল লাগল। আরেকটা ব্যপারে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলাম যে এখানে সবাই ইংরেজি বলে।

তো আমস্টারডাম সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে বেড়িয়ে এবার হেঁটে বেড়ানোর পালা। ছোট-বড় খাল বা নালা আর আশে পাশে নতুন-পুরোনো-অদ্ভুত সব রকম আর্কিটেকচারের স্থাপনা। একদম ১৯০০ এর সময়কার ধাঁচের বিল্ডিং যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি একদম হাইটেক বিল্ডিং ও চোখে পড়বে। স্টেশন এর ডান দিকে হেটে গিয়ে খালের উপরে একটা চাইনিজ স্টাইলের রেস্টুরেন্ট, নাম সি প্যালেস, বেশ সুন্দর সেখানটায়। কতক্ষণ ঘুরাফেরা করে ব্রিজ দিয়ে অপর পাশে গেলাম। অগণিত ব্রিজ এখানে সেখানে। ছোট বড় খাল নালা সবকিছুর উপরেই একটু পরপরই ব্রিজ।

Sea Palace
দুইতলা সাইকেল পার্কিং | ক্যানেল

হেঁটে হেঁটে মূল বড় রাস্তা ছাড়িয়ে অলি-গলিতে ঢুকে পড়লাম। আগে টিভি বা ইউটিউবে দেখতাম ইতালির ভেনিস এর এমন ক্যনেল নেটওয়ার্ক। ক্যনেলের দুইপাশে জেগে উঠা রঙ বেরঙ্গের পুরানো আমলের স্থাপনা। সেইসব ক্যনেলে আবার ট্যুরিস্টদের নিয়ে ছোট ছোট নৌকা ছুটে চলছে। যদিও পানি খুব একটা সুবিধার না, একটু ময়লাই বলা চলে।

আরেক্টু এগোতেই Basiliek van de Heilige Nicolaas খুবই সুন্দর, পুরাতন এবং, বিশাল আকৃতির একটা চার্চ চোখে পড়ল। রঙ্গিন কাচের আর সাদা পাথরের কারুকাজ দেখার মতন।

Basiliek van de Heilige Nicolaas
Basiliek van de Heilige Nicolaas

চার্চ থেকে বেড়িয়ে আবার অলিতে-গলিতে। বড়দিনের ছুটি হওয়ায় ট্যুরিস্টও বেশ ভালই বলা যায়। এদিক সেদিকে ছোট ছোট গ্রুপের গাইডরা বিভিন্ন পুরাতন স্থাপনার ইতিহাস বলে বলে দেখাচ্ছেন। হাটতে হাটতে একসময় চলে গেলাম আমস্টারডাম এর বিখ্যাত রেড লাইট স্ট্রিটে। লাল বাতি জ্বালানো কাচের জানালার ভেতর থেকে বাইরের মানুষদের আকর্ষণ করার চেষ্টা চলে। সাথে আশে পাশে অনেক কফিশপ আছে, যেগুলোতে গাজা দিয়ে বানানো কফি, কেক, চকলেট সব কিছুই পাওয়া যায়, এমনকি হ্যাশ মিউজিয়ামও দেখতে পেলাম!

রেড লাইট স্ট্রিট

সন্ধ্যায় রেড লাইট স্ট্রিটে থেকে চলে গেলাম ড্যাম স্কয়ার এ। আমস্টারডামের সেট্রাল লোকেশন বলা যায়, শপিং স্ট্রিট, মাদাম তুসো মিউজিয়াম, ন্যাশনাল মনুমেন্ট, রয়্যাল প্যলেস, সব কিছুই এই পয়েন্টের চারদিকেই। তাই মানুষের ভিড়ও বেশি। বড়দিন উপলক্ষে অনেক রঙ বেরঙ্গের বাতি আর ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে সাজানো। আর সাথে এদিক সেদিক স্ট্রিট মিউজিক বেশ ভালই লাগল, কিছুক্ষন সেখানে থেকে বেশ ঠাণ্ডা লাগছিল আর সারাদিন ঘুরাঘুরি করে বেশ ক্লান্ত ও ছিলাম। তাই শপিং রোডেই এক রেস্টুরেন্ট এ বসে হট চকলেট খেয়ে একটু জিরিয়ে নিলাম। তারপর হেঁটে হেঁটে আবার আমস্টারডাম সেট্রাল স্টেশনের সামনে।

ড্যাম স্কয়ার
ড্যাম স্কয়ার
ড্যাম স্কয়ার

রাতে ক্যানেলের চারপাশের সাজানো বাতি আর ছুটে চলা ট্যুরিস্ট বোটগুলো দেখতে বেশ ভালই লাগছিল। একবার ভাবলাম ক্যানেলে বোট ট্রিপ এ যাব কিনা, কিন্তু খরচ এবং সময়ের কথা চিন্তা করে গেলাম না। তবে সেখানে বেশ কিছুক্ষন দাড়িয়ে শহরের কোলাহল ও রাতের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে একটা টাইমল্যাপস করে ফেললাম।

আমস্টারডাম

আমার আজকের থাকার জায়গা হারলেম নামক শহরে, আমস্টারডামের থেকে ২০ মিনিট ট্রেন জার্নি। সেখানে গিয়ে এক বড়ভাই এর বাসায় উঠলাম, দেশ থেকে আসার পরে এই প্রথম আগে থেকেই পরিচিত কারো দেখা পাওয়া গেল। সাথে দেশি খাবারে পেটপুজো করে এদিনের মতন ঘুম।

দিনঃ ২

পরদিন সকালে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠে আস্তে ধীরে নাস্তা করে বের হলাম। বাইরে ঠাণ্ডা বাতাস আর আকাশও বেশ মেঘলা — একদম বাসায় কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমানোর আবহাওয়া। তাও বেড়িয়ে যখন পরলাম ঘুরতে তো হবেই। চলে গেলাম যান সান্স (Zaanse Schans) নামক জায়গায়। এখানের বিশেষত্ব হচ্ছে, এখানে অনেক পুরনো কিছু রঙ্গিন উইন্ডমিল রয়েছে নদীর পাশের একটা ছোট্ট ভিলেজে। বেশ সুন্দর জায়গা এবং সাজিয়ে গুছিয়ে ট্যুরিস্টদের জন্য আকর্শনীয় করে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট ঘরবাড়ি আর তাতে ট্যুরিস্টদের এর কফি বা বিয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আমি ঢুকলাম একটা চিজ এর শপ এ। কত রকম চিজ চারদিকে ব্রিক্রি করছে, আর মানুষও কিনছে বেশ। টেস্ট করে দেখার সুযোগ আছে, তাই দুইরকম চিজ টেস্ট করলাম।

Zaanse Schans
Zaanse Schans

ঠাণ্ডায় আর ঘুম ঘুম আবহাওয়ায় হাটতে আর ভাল লাগছিল না। তাই ঘুরে ফিরে স্টেশনে এসে এক কাপ কফি খেয়ে এবেলার মতন ঘুম তাড়ালাম। আজকে আর খুব একটা হাঁটবো না বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। আমস্টারডাম ফেরত এসে ভাবলাম আগেরদিন Amstel নদীর অপর পাশে ঘুরবো বলে ঠিক করলাম। আমস্টারডাম স্টেশন থেকে চারদিকে ফেরি চলাচল করে এবং এই ফেরি চড়তে কোন টাকাও লাগেনা। বেশ, তিন দিকের তিনটা ফেরিতে আপ-ডাউন ঘুরে নদী থেকে আমস্টারডাম শহরের অনেক সুন্দর ভিউ বিনা পয়সার আর না হেটেই দেখে ফেললাম, আর রিভার ক্রুজও হয়ে গেল।

ফেরি চড়ে শহর দেখা

ফেরি চড়া শেষে ওপাড়েই গেলাম প্রথমে গেলাম Eye Film Museum এ। যেমন নান্দনিক মর্ডান আর্কিটেকচার তেমন সুন্দর ভেতরেও, একটা রেস্টুরেস্ট আছে একবারে নদীর পাড়ের সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। সেখানে একটুক্ষণ বসে তারপর গেলাম পাশেই থাকা বহুতল ভবন — আমস্টারডাম টাওয়ার (A’DAM Tower)। টিকিট কেটে উপরে উঠতে হয় স্কাই ভিউ টপ ফ্লরে যাবার জন্য। দোতলায় দুইটা ভিন্ন ফটো বুথ আছে যেখানে বিভিন্ন ভাবে গ্রিন স্ক্রিন এর সামনে ছবি তুলে সেটাকে এডিট করে টাওয়ারের উপরের ভিউ বানিয়ে দেয়া হয়। অনেকেরই খুব মজা নিয়ে ছবি তুলছে। উপরে উঠার লিফটাও দারুণ, মিউজিক এবং মাথার উপরে টানেলে মটন আলোর কারসাজি। টাওয়ারের উপরে দুইটা রেস্টুরেন্ট আছে, একটা ৩৬০ ড্রিগ্রি ঘুরতে থাকে, অন্যটা স্থির। আমি গেলাম একবারে ছাদের স্কাই ডেক এ। এত উপরে বাতাস অনেক, তবে পুরো শহরের ভিউ সত্যিই অতুলনীয়। আস্তে আস্তে আমস্টারডামের বুকে দিনের আলো থেকে সন্ধ্যা নেমে আসা আর শত সহস্র বাতি জ্বলে উঠার দৃশ্য সত্যিই চমৎকার। অনেকক্ষণ সেখানে থাকার পর টাওয়ার থেকে নেমে স্টেশনেই একটা রেস্টুরেন্টে খেয়েদেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করলাম। তারপর আবার হটতে হাটতে এদিক সেদিক দেখে এদিনের মতন ঘুরাঘুরির পর্ব চুকিয়ে বাসায় ফেরত গেলাম।

দিনঃ ৩

এই দুইদিন আমস্টারডাম একা একা ঘুরলেও আজকে আমি আর ভাইয়া দুইজন যাচ্ছি। আজ আমাদের গন্তব্য নেদারল্যান্ডস এর উত্তরে — Den Helder শহরে। সমুদ্রে তীরের এই ছোট্ট শহরে পৌঁছোতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগল। পথে আবার সেই সমতল ভূমি আর অনেক অনেক গ্রিনহাউস চোখে পড়ল।

Den Helder

ডেন হেল্ডার নেমে হেঁটে হেঁটে একদম উত্তরে ফেরি ঘাট এর কাছে চলে গেলাম। আমাদের প্লান ছিল ডেন হেল্ডারেই ঘুরবো, কিন্তু ফেরির স্ট্যন্ডে গিয়ে মাত্র আড়াই ইউরোতে ফেরি আপ-ডাউন শুনে আর দেরি না করেই উঠে পরলাম ফেরিতে। আর এদিনের রোদেলা পরিষ্কার আকাশ তো আছেই!

বেশ বড় ফেরি, তিনতলা প্রায়, তাতে দুইতলা গাড়ির, আর মানুষের জন্য উপর তলা। তবে এই টাকা দিয়ে এত ভাল ফেরি আশা করিনি। ভেতরে সুন্দর কফিশপ, বসার, গল্প করার আরামদায়ক সোফা, ফলস আকাশের মতন লাইটিং কি নেই!

ফেরির বাহির-ভেতর
Den Helder port

ওপারের দ্বীপটির নাম টেক্সেল। অনেক বড় দ্বীপ, বাসে করে মাঝামাঝি একটা সৈকতের কাছে যেতেই আধঘণ্টা লাগল প্রায়। যেখান বাস থেকে নামলাম সেখানতা বেশ সুন্দর, নাম ডি কুগ। একটা ট্যুরিস্ট স্ট্রিট, যার দুইপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট এবং কিছু দোকানপাট। তবে ভিড় তেমন একটা নেই বললেই চলে। হয়তো উইন্টারে এত দুরের বিচে মানুষজন কম আশে। তবে জায়গাটা ছোট্ট হলেও বড়দিন উপলক্ষে সুন্দর করে সাজানো। আমাদের জন্য আজকের দিনের বাড়তি পাওনা সুন্দর সুর্যের আলো। তাই ছবি তোলায় কোন কমতি হলনা আজকে, দুইজন মানুষ ঘুরার সুবিধা আর কি!

বিকেলে গেলাম বিচ এ। দ্বীপ এর এক মাথা থেকে আরেকমাথা পুরোটাই সাদা বালির বিচ, প্রস্থও বেশ ভালই বলতে হবে।

টেক্সেল সৈকত

সেখানে বেশ অনেকক্ষণ হাটা চলা করে সুর্যাস্ত দেখলাম, তারপর আবার শপিং স্ট্রিটে এসে খেয়ে নিলাম। ইচ্ছা ছিল মাছ খাবার, তবে সেখানে এত দাম যে আর সাহস হলনা। তারপর শুরু হল ফেরার জার্নি। আসার পথে ডেন হেল্ডারের লাইট শো উপভোগ করলাম কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে। শহরের বেশ কিছু জায়গায় বিভিন্ন স্থাপনার উপর প্রজেক্টর দিয়ে লাইট শো করা হচ্ছে।

রাতের আলোকিত ডেন হেল্ডার

আজ ফিরে রাতে গল্প করতে ক্ষুধা লেগে গেল আবার। তাই টার্কি বেক করে রাত ২ টার সময় ক্ষুধা নিবারণ করে তারপর ঘুম।

দিনঃ ৪

আজকের গন্তব্য ডেন হাগ, সমুদ্রের পাশে অবস্থিত এই শহরটি ইউরোপিয়ান এবং ইন্টারন্যাশনাল বেশ কিছু সংস্থার প্রধান কার্যালয়। হারলেম থেকে হেগ যেতে সময় লাগে চল্লিশ মিনিটের মতন। ট্রেন থেক নেমেই ট্রামে করে সোজা চলে গেলাম স্কেভেনিং বিচ এ। বিচ এ নেমেই দেখা যায় ডেন হাগের বিখ্যাত ডি পিয়ার। সেখানে ফেরিস হুইল, বাঞ্জি জাম্পিং, জিপ লাইনিং এর ব্যবস্থা আছে, আর দুইতলা ইনডোর আউটডোর ঘুরা, শপিং এবং খাবার যায়গা তো আছেই।

De Pier

বিচ এর একদিকে কিছু সবুজ ছোট ছোট উঁচা বালি মাটির ডিবি। অবশ্য নেদারল্যান্ডস এর মতন সমতল দেশ হিসেবে পাহাড়ও বলা চলে। প্রথমে এই গুলোর একটাতেই উঠে আশে পাশে অনেকটা এলাকা দেখে নিলাম একটু উঁচু থেকেই। তারপর সেখান থেকে নেমে স্কেভেনিং বিচ এর মূল রোডে গেলাম। শুরুতেই একটা সামুদ্রিক মাছের রেস্টুরেস্ট দেখে পেট ভরা থাকা সত্ত্বেও লোভ সামলাতে পারলাম না। মাছ ভাজা খেয়ে পেট ঠাণ্ডা করে চলে গেলাম ডি পিয়ার এর ভেতরে। নিচের তলায় বেশিরভাগই রেস্টুরেন্ট আর কয়েকটা দোকান। শেষ মাথায় একপাশে একটা রিসোর্ট আর অন্যপাশে এন্টারটেইনমেন্ট। সমুদ্রের পাড়ে ফেরিস হুইল দেখে আমিও টিকিট কেটে উঠে গেলাম। প্রায় ২০ মিনিটের কয়েকবারের চক্করে উঁচু থেকে বিচের অনেকদূর দেখার সাথে সাথে শহরেরও অনেক দূর দেখা গেল। তারপর রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে গেলাম বিচ এ। এখানে পর্যটকদের বেশ ভিড়, আর উৎসব ভাবটাও বেশ। বিচে বেশ অনেকক্ষণ ঘুরাফিরা করে রোডের শেষ মাথায় চলে গেলাম। সেখানে একটা জাহাজ/ফেরি পোর্ট। এর দুইপাশে দুটো লাইটহাউস যার একটায় মাথায় লাল আর আরেকটার মাথায় সবুজ বাতি। সেখানে সন্ধ্যা উপভোগ করে ফিরলাম আবার স্টেশনে। আসার পথে আরেক দফা মাছ ভাজা খেয়ে নিলাম।

স্কেভেনিং বিচ
রাতের স্কেভেনিং বিচ
স্কেভেনিং বিচ

আজকের রাতের গন্তব্য হচ্ছে পোর্টসিটি — রটারডাম। রটারডামে নেমে আরেক বড়ভাইয়ের বাসায় যাবার আগে একটু ইরাসমাসবার্গ থেকে ঘুরে এলাম। মুলত একটা সাসপেনশন ব্রিজ আর সন্ধ্যার পরে বেশ সুন্দর লাগে ব্রিজ এবং এর আশে পাশের লাইটিং করা বিল্ডিং এবং অন্য ব্রিজগুলো। রটারডাম এ হাই রাইজ বিল্ডিং এর সংখ্যা অনেক। আর সেগুলোতে ঝলমলে বাতির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতন। তো ঘুরে ফিরে প্রায় রাত ১০ টার দিকে ভাইয়ের বাসায় ফিরে খেয়ে দেয়ে জগতের সকল ক্লান্তি নিয়ে ঘুম।

রাতের রটারডাম

আজ ফেরার পালা, তবে দুপুর পর্যন্ত একটু সময় হাতে আছে। তাই রটারডাম সেন্ট্রালে গিয়ে সকালের নাস্তা করে একটু হাঁটাহাঁটি করে প্রথমে গেলাম লিঞ্জবান স্ট্রিটে। রটারডাম সেন্ট্রালের আশেপাশেই হেঁটে দেখার মতন অনেক কিছু। মল রোড টাইপের বেশ জমকালো একটা অবস্থা বেশ বড় এলাকা জুড়ে। এই স্ট্রিটের এক মাথা গিয়ে শেষ হয়েছে Stadhuis Rotterdam এ যেটা আসলে রটারডাম টাউন হল। সেখান থেকে ট্রাম এ করে গেলাম রটারডাম ব্লাক স্টেশনে। সেখানে আরেকটা স্কয়ার এর মতন জায়গা, আশ পাশের নানা রকম অদ্ভুত আর্কিটেকচারের স্থাপনা। তবে আমার আগ্রহ ছিল কিউব হাউস এর প্রতি। এক সারিতে অনেকগুলো কিউব আকৃতির বাসা কাত করে যেমন একটা কিছুর উপর বসানো আছে! সেখানে হেঁটে ঘুরে দেখলাম কতক্ষণ, তবে অনেক সময় না থাকায় বাড়িগুলোর ভেতরে ঢুকলাম না আর।

রটারডামের এদিক-সেদিক

এবার ফেরার পালা। রটারডাম সেন্ট্রাল থেকে ফ্লিক্সবাসে ডিরেক্ট কোলনের ৫ ঘণ্টার জার্নি শেষে, ক্লান্ত আমি ঘরে ফিরলাম একগাদা সুখস্মৃতি নিয়ে, আর দিনগোনা পরবর্তি ট্রিপ এর …

--

--