ভিয়েনার এদিক সেদিক, অস্ট্রিয়া

বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসযোগ্য শহরে

Nowshad
tripsharebd
9 min readAug 23, 2022

--

১৭ অগাস্ট ২০২২, কোথাও একটা যাওয়া দরকার। ১ মাস জুড়ে ইউরোপিয়ান ৩৩টা দেশে ট্রেনযোগে ঘুরে বেড়ানোর জন্য একটা পাস কিনেছিলাম, সেটার মেয়াদ এখনো আধা মাস বাকি আছে। ইচ্ছা ছিল আমার বর্তমান শহর, জার্মানির রাজধানী বার্লিন থেকে উত্তরে স্ক্যান্ডিনেভিয়া (ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে) যাবার। কিন্তু বছরের এই পিক ট্যুরিস্ট সিজন এর কারণে খরচ যেমন বেশি সেখানে, অন্যদিকে একটু কম ফ্রিকুয়েন্সির ট্রেন থাকায় এইরকম হুট করে কোথাও চলে যাওয়াটাও একটু কঠিন মনে হল। তাই শেষমেশ সহজে যাওয়া যাবে এমন যাওয়া খুঁজেটুজে ঠিক করলাম অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা যাব।

রাতের নাইট ট্রেন, বার্লিন থেকে ২ ঘণ্টা ট্রেন জার্নি দূরের, জার্মান-পোলিশ বর্ডার এর ছোট স্টেশন Rzepin থেকে। স্টেশনে কোন ডিজিটাল সাইনবোর্ড নাই, নাই কোন কাউন্টার বা স্টাফ। ট্রেন কোন প্লাটফর্মে আসবে সেটা বুঝতে বেশ বেগ পেতে হল। প্লাটফর্ম এর নম্বর দেওয়া নোটিশ বোর্ডের একটা কাগজে, তাও নম্বরগুলো এমনভাবে দেওয়া যে আমার পরিচিত ইউরোপিয়ান স্টেশনের মতন ও না - Platform V, Track 32!

সময় মতন ট্রেন আসল প্লাটফর্মে, অস্ট্রিয়ার ট্রেন কোম্পানি ÖBB Nightjet এর এই ট্রেনগুলো সাধারণত রাতে একদেশ থেকে আরেকদেশে চলাচল করে, ভেতরে স্লিপিং বার্থ, গোছল করার যায়গা থাকায় অনেকেরই প্রিয় এই ট্রেনগুলো।

Rzepin এর টাইমটেবিল | ভিয়েনা সেন্ট্রাল স্টেশন

আমি সাধারণত ট্রেন জার্নিতে ঘুমাতে পারিনা তেমন, তাও একটু আধটু চেষ্টা করলাম। আধো আধো ঘুমে টলতে টলতে একসময় সকাল হয়ে এল। সকাল প্রায় ৭ টার দিকে পৌছালাম ভিয়েনায়।

বেশ ক্ষুধা পেয়েছে, স্টেশনই একটু হাত-মুখ ধুয়ে, স্টেশনের বাইরে বসে, একটা লম্বা রুটি দিয়ে বানানো স্যান্ডউইচ (baguette sandwich) খেতে খেতে শরীর একটু ঘুম ঘুম ভাব থেকে জেগে উঠল। আর উইক ডে হওয়ায় স্টেশনে মানুষের ব্যাস্ততাও বাড়তে লাগল।

আমার থাকার জায়গা ভিয়েনার সবচেয়ে বড় মার্কেট Naschmarkt এর সাথেই একটা হোস্টেলে। স্টেশন থেকে একটা এপ এর মাধ্যমে সাইকেল ভাড়া করে বাতাস খেতে খেতে চলে গেলাম হোস্টেলে। হোস্টেল/হোটেলের সাধারণ নিয়মের মতই চেকিন এর সময় দুপুর ২ টায়, এখন বাজে মাত্র সাড়ে আটটা। তাই ব্যাগ রেখে লবির এক কোনায় গিয়ে ল্যাপটপ খুলে বসলাম।

ঘুরতে এসেছি, কিন্তু ছুটি নিয়ে নয়। দিনে রিমোট অফিস করবো, আর অফিসের পরে যদ্দুর ঘুরে বেড়ানো যায়। গরমের দিনের এই একটা ভাল ব্যাপার, দিন বড় হওয়ায় ৪-৫ টায় অফিস শেষ করলেও আরও ২-৩ ঘণ্টা দিনের আলো পাওয়া যায়, তাই ঘুরতেও সুবিধা।

তো লবিতে বসে অফিসের কাজ-মিটিং-মিছিল করে একসময় দিনের অধিবেশন সমাপ্ত হল। এরপরে হোস্টেলে চেকিন করে, রুমে চলে গেলাম। ৫ জনের শেয়ার্ড রুম, একটা ব্যাঙ্কবেডের (দোতলা) নিচের তলায় মাথা গোজার ঠাই হল।

হোস্টেল লবি

ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম শহর ঘুরে দেখতে, তেমন কোন প্লান করা নাই কি কি দেখবো, তবে এইরকম শহর ঘুরার জন্য সাইকেল বা স্কুটার আমার বেশ পছন্দের জিনিস। আরাম করে কম খরচে অনেক কিছুই দেখা যায়, যেখানে খুশি থামা ও যায়। তো এপ দিয়ে সাইকেল ভাড়া করে চলে গেলাম একটু ওল্ড টাউনের দিকে। ইউরোপের প্রায় সব শহরের একটা কমন পাটার্ন আছে, একটু ওল্ড টাউন, শপিং স্ট্রিট, কিছু চার্চ ও মিউজিয়াম হচ্ছে কমন। তাই প্লান না করা থাকলেও শহরের কেন্দ্রের দিকে গিয়ে হেঁটে বেড়ালেই অনেককিছু দেখা হয়ে যায়।

ভিয়েনাতে আমার আগে আগ্রহের জায়গা হচ্ছে ভিয়েনার পাবলিক লাইব্রেরি, ইন্টারনেটে অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি দেখেছি জায়গাটার। তবে লাইব্রেরির গেঁটের সামনে গিয়ে একটু আশাহত হলাম, কারণ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেইটিনেন্স এর জন্য এটির মূল হলরুম বন্ধ। তো, কি আর করার আমার উদ্দেশ্যহীন ঘুরাফেরা কিছুক্ষণ করে একটু Karlskirche এর সামনে গিয়ে থামলাম। ১৮শ শতাব্দীর এই চার্চটির ডোম, সামনের উন্মুক্ত ঝর্না ও প্রাঙ্গণ যেমন সুন্দর, তেমনি ভেতরের অসাধারণ কারুকার্যও অবাক হয়ে দেখার মতন। তো এই চার্চের সামনেই বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে দেহঘড়ি খাবারের সন্ধান করতে বলল।

Karlskirche
ওল্ড টাউন

সুপারমার্কেট থেকে কিছু জিনিশ কিনে হোস্টেলের কিচেনে গিয়ে একটু রান্নাবাটি করলাম। বিশেষ কিছুনা। একটু ভেজিটেবল সুপ আর রুটি, এই দিয়েই এই দিনের পেটপুজো।

গতকাল রাতে তেমন ঘুম হয়নি, তারপর সারাদিন অফিস, এর পরে ৩৫ ডিগ্রি গরমে ঘুরাঘুরি - সব মিলিয়ে শরীর বেশ ক্লান্ত থাকায় রাত ৮টার দিকেই রুমে ফিরলাম। আর ঘুমের দেশে হারাতে তেমন কোন সময়ই লাগলো না, তাই রাতে রুমের আর কারও সাথে পরিচয় হওয়া হলনা আজকের মতন।

শুক্রবার, সকালে দুইটা Croissant আর একটা মিল্কশেক দিয়ে নাস্তা করে আবারো কাজের যোগদান। গতকালকে লবিতে বসেছিলাম, সেখানে আরও অনেক মানুষ থাকায় কাজে মনযোগ দেয়া একটু কঠিন। তাই আজকে হোস্টেলের বার এর চেয়ার টেবিলে অফিস পেতেছি, দিনের বেলায় বার বন্ধ থাকায় একদম নিরিবিলি, আমার জন্য বেশ ভালই হল।

আজকে কাজ-কর্ম শেষ করেই সাইকেল নিয়ে চলে গেলাম শপিং রোডে। অনেক লম্বা শপিং স্ট্রিট, সোজা হাঁটলে প্রায় বেশিরভাগ গুরুত্তপুর্ন জায়গা পেরিয়ে ভিয়েনার মূল নদী Danube এর পারে গিয়ে শেষ। শপিং স্ট্রিটের দুইপাশে নানা জিনিসের দোকানপাট; নামি-দামি ব্রান্ডের দোকানপাট যেমন আছে, আবার লোকাল ছোটখাট দোকানও আছে। এইখানে নানারকম খাবারের দোকানের সংখ্যাও অনেক। সামান্য ঢালু এই রাস্তায় সাইকেল এর প্যাডেল দিতে হয়না, শুধু ব্রেকটা হালকা করে ধরে রাখলেই কয়েক কিমি চলে যাওয়া যায় আরাম করেই। তবে আজকে ক্ষুধাটা বেশিই পেয়েছে, তাই থামলাম একটা অস্ট্রিয়ান রেস্টুরেন্টে।

শপিং স্ট্রিট

যেসব খাবার অস্ট্রিয়ায় বেশ কমন টার মধ্যে অন্যতম Schnitzel। সাধারণত মাংসকে একটু পিটিয়ে থেতলিয়ে সমান করে, তারপর বেসন এর মতন একটা লেয়ারে ডুবিয়ে ভাজা হয়। অনেকটা আমাদের দেশের চিকেন/বিফ চাপ এর মতন। তো একটা চিকেন Schnitzel আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দিয়ে রাতের খাবার এর আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত হল।

পেট শান্তি, তো মন শান্তি। আর মনে এই শান্তি নিয়েই হেঁটে চললাম এই রাস্তা ধরে। দোকানের বাতিগুলো জ্বলে উঠল। শুক্রবারে সন্ধ্যার শপিং স্ট্রিট যেকোন শহরেই আমার খুব প্রিয় জায়গা, রঙ্গিন বাতি জ্বলে চারিদিকে, মানুষজনও পুরো সপ্তাহের কাজের পালা চুকিয়ে বাইরে বেরোয় একটু আনন্দ-ফুর্তি করতে, সবখানেই একটা কোলাহলের ব্যাপার আছে। আজকেও এই ভিয়েনায় ব্যাতিক্রম নেই, অনেক মানুষ বাইরে বাইরে।

শপিং স্ট্রিট শেষে পৌছালাম MuseumsQuartier, অনেকগুলো মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারি একসাথে। আর সপ্তাহন্তে মানুষের আড্ডার জায়গাও বলা যায়। শুক্র-শনিবার রাতে এখানে ভিয়েনার সংস্কৃতি নিয়ে ওপেন এয়ার চলচিত্র বা প্রামান্যচিত্রও দেখানো হয়। তাই মানুষের আগ্রহের জায়গাটা আরও বেশি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে বসে মানুষের কোলাহল দেখলাম, ভালই লাগল।

মিউজিয়াম কোয়ার্টার

এর একটু সামনেই রাস্তা পেরিয়ে Maria-Theresien-Platz। অসাধারণ স্থাপত্যকলার নিদর্শন এই প্লাজার দুইপাশে অবস্থিত দুইটি জাদুঘর — Natural History Museum এবং Art History Museum। মাঝে অবস্থিত Maria-Theresa’র ভাস্কর্য জানান দিচ্ছে শক্তিশালী Habsburg monarchy এর একমাত্র নারী সম্রাজ্ঞীর গুরুত্তপুর্ন ইতিহাসের। সে সময় তার নেতৃত্বে ইম্পেরিয়াল শাসনের আওতাধীন ছিল অনেকগুলো দেশ বা অঞ্চল — Austria, Hungary, Croatia, Bohemia, Transylvania, Mantua, Milan, Lodomeria and Galicia, the Austrian Netherlands, and Parma।

Maria-Theresien-Platz

এই জায়গার পরেই শুরু ওল্ড টাউন। একটার পর একটা সুন্দর স্থাপনা, সবগুলোর নাম দেখার মতন ইচ্ছাও হলনা, শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেই গেলাম।

ওল্ড টাউন

গতকালকের মতন আজও বেশ গরম, ৩০-৩২ডিগ্রি। তবে এখন হাল্কা বৃষ্টি শুরু হওয়ায় গরমের প্রভাবটা কমতে শুরু করেছে। কয়েকফোটা বৃষ্টি গায়ে পরায় বেশ আরাম লাগছে, আর সিলেট জীবনে অনেক অনেক বৃষ্টিভেজা দিনের কথা মনে করিয়ে দিল। তো, কি আর করার, অগত্যা সাইকেল নিয়ে একটু বৃষ্টিবিলাসে বেরুলাম। সাইকেল নিয়ে চলে গেলাম Danube নদীর পাড়ে, সেখানে অনেকগুলো ক্লাব আর রেস্টুরেস্ট। মূলত তরুণ-তরুণীদের পার্টী করার জায়গা এইটা। আর অনেকগুলো নতুন স্থাপনাও চোখে পড়ল নদীর পাড় ঘেঁষে, কাঁচঘেরা উঁচু উঁচু দালান। তো বৃষ্টিবিলাসে শেষে আধভেজা হয়ে হোস্টেলে ফিরলাম।

ডানউব নদী | বৃষ্টিতে সাইকেল

আজকে আগে ঘুমানোর তাড়া নেই, কারণ কাল-পরশু শনি-রবি সাপ্তাহিক ছুটি। রুমের দুইজনের সাথে পরিচয় হল, একজন ৩৬ বছর বয়সী ফেঞ্চ ট্যাক্স ল ইয়ার, আরেকজন ২০ বছর বয়সী ডাচ এস্টোনমি স্টুডেন্ট। তাদের ঘুরাঘুরি গল্প শুনলাম, নিজের এই দুইদিনের দেখা থেকে কিছু সাজেশনও শেয়ার করলাম। কিছুক্ষণ গল্প করে আমার ব্যাটারি ফুরিয়ে এল, তাই আজকের মতন ঘুম...

শনিবার, সকালে আস্তে ধীরে ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করে লবিতে অপেক্ষা করছি। ১০:৩০ এ হোস্টেল থেকে একটা free walking tour এর ব্যাবস্থা আছে। প্রায় সব ইউরোপিয়ান শহরেই এইরকম কিছুনা কিছু থাকে যেখানে ২-৩ ঘণ্টায় একজন গাইড এর সাথে হেঁটে হেঁটে বেশ কিছু গুরুত্তপুর্ন জায়গা দেখা যায় ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও জানা যায়, সাথে খাবারের সাজেশন তো আছেই।

৩০-৩৫ বছর বয়সী আমাদের গাইড, হোস্টেলের সামনেই Naschmarkt থেকে হাটা শুরু। সাধারণত শনিবার ইউরোপের বেশিভাগ ছোটবড় শহরে খোলা যায়গায় flea market বসে যেখানে হরেক রকম জিনিস নিয়ে লোকাল মানুষেরা হাজির হয়। আর Naschmarkt জায়গাটা ভিয়েনার পুরানো বাজার যা বর্তমানে লোকালদের পাশাপাশি টুরিস্টদেরও মিলনমেলা। প্রায় ১২০ টির মতন স্টল বসে এই বাজারে, কি পাওয়া যায় না এইখানে, নানাদেশের নানারকম খাবার থেকে শুরু করে সুভিনির-কাপড়চোপড় সবই পাওয়া যায়।

Naschmarkt | MuseumsQuartier

সেখান থেকে ভিয়েনার ইউনিভার্সিটি হয়ে গেলাম গতকালকের MuseumsQuartier এ, একটা খোলা ছাদের যাওয়া যায় লিফটে করে কোন টাকা ছাড়াই, শেখান থেকে আশপাশের সুন্দর একটা ভিউ পাওয়া যায়। তো সেখানে কিছুক্ষণ বসে গেলাম Maria-Theresien-Platz। গতকাল শুরু দেখছি, আজ কিছু ইতিহাসও জানলাম। কিভাবে Habsburg Imperial Family বিশাল ইউরোপিয়ান এলাকার শাসন করেছে, ক্ষমতা পরিবারের রাখতে পরিবারের মাঝেই বিয়ে, কম্পোসার ভিভাল্ডীর সাফল্য ও ব্যার্থতা, ইত্যাদি আরও কতকি!

তারপরে হফবার্গ প্যালেস ও গার্ডেন এ যাওয়া হল, সুন্দর গেট ও গার্ডেনে বিশ্বখ্যাত মিউজিক কম্পোজার Mozert এর মুর্তি। তার জন্ম অস্ট্রিয়ার আরেক শহর সালজবুর্গে হলেও তিনি জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন এই ভিয়েনাতে, তাইতো ভিয়েনার ট্যূরিস্ট আকর্শনের অন্যতম বিষয় হচ্ছে Mozert ও তার সুর।

Albertina

হাঁটার গাইড এর পর্ব শেষ হয় Albertina'র ছাদে, আশেপাশে বেশ কিছু সুন্দর বিল্ডিং আছে। আছে কন্সার্ট গ্যালারি। গাইডকে টিপ হিসেবে ৫ ইউরো দিয়ে, নিজেই কিছুক্ষণ এদিক সেদিক হেঁটে বেড়ালাম। তারপর সেন্ট্রাল স্টেশনের কাছে Austrian Belvedere Palace এ চলে গেলাম সাইকেল নিয়ে। ১৮শ শতাব্দীর এই বিশাল এই প্যলেশ বর্তমানে জাদুঘর ও এর আর্ট কালেকশন এর জন্য বিখ্যাত। Claude Monet, Gustav Klimt সহ বিশ্ববরেণ্য শিল্পীদের কাজ এই জাদুঘরের দেখার মতন বিষয়। এছাড়া কয়েকধাপের বিশাল বাগান, রুচিশীল ফোয়ারা ও ভাষ্কর্যও দেখলাম সেখানে।

Belvedere Palace

সারাদিনের ঘুরাফেরা শেষে রুমে ফিরলাম, ফ্রেশ হলাম। নবাগত অস্ট্রেলিয়ান একজনের সাথে পরিচয় হল, তাকে আর ডাচ রুমমেটকে নিয়ে গেলাম শপিং স্ট্রিটে। সেখানে রাতের খাবার খেয়ে গল্প করতে করতে ফিরলাম হোস্টেলে। তারপর ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে ঘুম দিলাম, কালকে চেক আউট।

গত ১০ বছরে পৃথিবীর সবচেয়ে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় যে জায়গাটি সবচেয়ে বেশিবার প্রথম স্থানে ছিল সেটি হচ্ছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। তাই, ভিয়েনা যাবার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটা আগ্রহ কাজ করেছে যে এবার নিজ চোখে দেখব আসলেই কেন ভিয়েনা বারবার এত ভাল রেটিং পাচ্ছে!

সত্যি বলতে অসাধারণ লেগেছে শহরটি, অন্যরকম একটা প্রাণ আছে ভিয়েনার। বিশেষ কিছুনা, রান্ডম বিভিন্ন জায়গাও সুন্দর এই শহরটিতে। প্রাণবন্ত ও চমৎকার জায়গা। অনেকদিন থাকার সুযোগ হলে আসলেই এখানে থেকে লোকাল লাইফস্টাইল দেখার ইচ্ছা আছে, সেই ইচ্ছা নিয়েই আজকের পর্ব শেষ করছি। পরের পর্বে থাকবে খানিকটা অস্ট্রিয়ান পাহাড়-লেকের গল্প...

--

--