পুরনো পথ সাদা মেঘ — বুদ্ধদেবের পথে পথ চলা
অধ্যায় ৩
একমুঠো কুশ
ঘুমিয়ে পড়ার আগে স্বস্তি একটি বাঁশঝাড়ের তলায় বসে বুদ্ধদেবের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতি রোমন্থন করছিল। তার তখন ১১ বছর বয়স, মা সদ্য মারা গেছেন, তার দায়িত্বে তখন তিনটি ভাইবোন। সবথেকে ছোটটি কোলের শিশু, তাকে খাওয়ানোর মতন দুধটুকুও বাড়িতে নেই। কি ভাগ্য, গ্রামের রামভুল বাবুর চারটে বড় আর একটি ছোট মোষ ছিল — তিনি স্বস্তিকে লাগালেন সেই মোষগুলো চরাবার কাজে। তবেই না স্বস্তি প্রতিদিন কিছুটা করে দুধ দুয়ে তার শিশু-ভগ্নীর জন্য আনতে পারত! সে খুব যত্ন করে মোষগুলোর দেখভাল করত, কারণ ওই কাজটি গেলে তাদের সবাইকে না খেতে পেয়ে মরতে হত। বাবা মারা যাবার পর বাড়ির চালটুকুও সারানো যায়নি। একবার বৃষ্টি হলেই রূপক ছোটাছুটি করে পাথরের জালা নিয়ে এসে ছাতের ফুটোর মধ্যে দিয়ে ঝরে পড়া বৃষ্টির জল ধরতে লেগে যেত। বলা যদিও তখন ছয়, সে সেই বয়সেই রান্না করতে শিখে গেছে, ছোট বোনটার দেখভাল করতে হত, জঙ্গল থেকে কাঠকুঠো কুড়িয়ে নিয়ে আসত। শুধু তাই নয়, অত ছোট মেয়ে, সে তখনই আটা মেখে ভাইবোনেদের খাবার জন্য রুটি করে দিত। কালেভদ্রে হয়ত তরকারি জুটত। স্বস্তি যখন মোষগুলোকে রামভুলবাবুর খাটালে ফেরত দিয়ে বাড়ির দিকে পা দিত, রামভুলবাবুর বাড়ির হেঁসেল থেকে তরি তরকারীর সুবাস হাওয়ায় ভুরভুর করত, আর স্বস্তির জিভ বেয়ে জল আসত। মাংসর ঝোলে রুটি ডুবিয়ে খাওয়া যে কি বিলাসিতা বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সে সবই তাদের শেষ হয়ে গেছে। শিশুদের জামাকাপড় ছিঁড়ে একশা। স্বস্তির বড়জোর একটা ছেঁড়া ধুতি ছিল। খুব শীত পড়লে সে গায়ে একটা চট জড়িয়ে কোনমতে সামাল দিত। সেই ছেঁড়া চটটুকুই যে তার কাছে কি মূল্যবান, সে-ই জানে।
তা স্বস্তিকে মোষেদের খাওয়াবার জন্য ভালো চারণভূমি দেখে রাখতে হত, তা না হলে, মোষগুলোর যদি ভালমতন খাবার না জুটত, রামভুলবাবুর হাতে স্বস্তির মার খাওয়া ছিল অবধারিত। তাছাড়া, প্রতিরাতে মাথায় করে ঘাসের বাণ্ডিল বয়ে আনতে হত তাকে যাতে মোষগুলো সারারাত খেতে পারে। সন্ধ্যেবেলা মশা তাড়াতে স্বস্তি ধুনো দিয়ে আগুন জ্বেলে আসত। এতসব খাটনির বিনিময়ে রামভুল বাবু তাকে হপ্তায় দুবার চাল, আটা, নুন এইসব দিয়ে মাইনে দিতেন। একেক দিন স্বস্তি বাড়ি আসার সময় নৈরঞ্জনা নদী থেকে মাছ ধরে নিয়ে আসত , ভীমারা রান্না করে দিত।
একদিন দুপুরবেলা মোষগুলোকে চান-টান করিয়ে ঘাসের বেশ একটা বড় বাণ্ডিল কেটে ফেলার পর স্বস্তি ভাবল জঙ্গলের শান্ত শীতল ছায়ায় একটু একা একা নিজের মতন ঘুরে বেড়াবে। জঙ্গলের ধারে মোষগুলোকে চরতে ছেড়ে দিয়ে স্বস্তি একটা বড়সড় গাছের খোঁজ করছে জিরোবে বলে, এমন সময় সে থমকে দাঁড়াল। দেখে কি, বড়জোর হাত কুড়ি দূরে, একটা অশ্বথ্থ গাছের তলায় একজন মানুষ চুপ করে শান্ত হয়ে বসে আছেন। স্বস্তি তাঁর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কোন মানুষ যে অমন শান্ত হয়ে, সুন্দর করে বসে থাকতে পারে, এরকম একটা ব্যাপার সে কখনো কোনদিন দেখে নি। মানুষটা টান টান ঋজু হয়ে বসে, তার দুই পা উরুর ওপরে। তিনি স্থির হয়ে বসে আছেন। তাঁর চোখদুটি আধ-বোজা, তাঁর দুটি হাত কোলের ওপর আলতো করে ফেলা। তাঁর পরিধানে একটি মলিন হলুদ জোব্বা, একটি কাঁধ উন্মুক্ত। তাঁর সারা শরীর থেকে কেমন একটি শান্ত, সমাহিত জ্যোতি নির্গত হচ্ছে। মানুষটির দিকে একবার তাকিয়েই স্বস্তির মনে একটা বেশ চনমনে ভাব এল। উত্তেজনায় তার বুক রীতিমতন ধুকপুক করছে। এমন একজন মানুষ যাকে সে চেনে না, জানে না, তাকে এক ঝলক দেখল কি দেখল না, তাতেই তার মনে অমন ভাব কি করে জাগল, স্বস্তি বুঝতে পারল না। যাইহোক, কেমন যেন শ্রদ্ধায় আপ্লুত হয়ে স্বস্তি স্থাণুবৎ লোকটির দিকে হাঁ করে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
একটু পরে মানুষটি চোখ খুললেন। প্রথমে তিনি স্বস্তিকে দেখতে পাননি, কারণ পা ছড়িয়ে গোড়ালিদুটিকে, পায়ের চেটোদুটিকে তিনি হাত দিয়ে দলছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটতে লাগলেন। স্বস্তির দিকে পিছন করে হাঁটছিলেন বলে তখনও স্বস্তিকে দেখতে পাননি। স্বস্তি দেখতে লাগল লোকটি কেমন করে নিঃশব্দে জঙ্গলের পথে একটু একটু করে পা ফেলে হাঁটতে লাগলেন যেন হাঁটার মধ্যে দিয়ে ধ্যান করছেন। সাত আট পা যাবার পর তিনি যেই ঘুরে দাঁড়ালেন, অমনি স্বস্তির মুখোমুখি। তখন তাঁর সঙ্গে স্বস্তির দেখা হল।
স্বস্তির দিকে তাকিয়ে তিনি হাসলেন। আজ অবধি স্বস্তির দিকে তাকিয়ে অমন মিষ্টি করে কেউ হাসেনি। কি যেন এক অদৃশ্য শক্তির হাতছানিতে স্বস্তি তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটু দৌড়ে গেল, তারপর হাতখানেকের কাছে গিয়ে সে চুপ করে দাঁড়িয়ে গেল, আর এগোল না, কারণ তার হঠাৎ মনে পড়ে গেল, সে অচ্ছ্যুৎ, উঁচু জাতের লোকের বেশী কাছে তাকে যেতে নেই।
স্বস্তিরা অচ্ছ্যুৎ। চার উচ্চ বর্ণের মধ্যে তারা পড়ে না। তার বাবা তাকে বহুকাল আগে শিখিয়েছিলেন যে ব্রাহ্মণের জাত সবচেয়ে উঁচু, তারা গুরু-পুরোহিতের কাজ করে, তারা সব বেদপাঠ করে, ঠাকুরের কাছে পুজো দেয়। ব্রহ্মা যখন পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, তখন ব্রাহ্মণরা তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত হয়েছিলেন। এঁদের পরে ক্ষত্রিয় জাতি। এঁরা সব বড়বড় রাজকার্য় কি সৈন্যবাহিনীতে উঁচু পদে কাজ করতেন, কারণ এঁরা নাকি ব্রহ্মার দু হাত থেকে নিঃসৃত হয়েছিলেন। যাঁরা বৈশ্য তাঁরা সব ব্যবসায়ী, সম্পন্ন কৃষক, এঁরা ব্রহ্মার দুই উরু থেকে জাত। শূদ্ররা সব ব্রহ্মার পা থেকে জন্মেছিলেন, তাই শূদ্ররা সবথেকে নীচু জাতি। ওরা শুধুই কায়িক শ্রম করার যোগ্য। তা স্বস্তির পরিবারের আবার জাত বলেও কিছু ছিল না, স্বস্তিরা যাকে বলে অচ্ছ্যুৎ। স্বস্তিদের মত মানুষদের গ্রামের মধ্যে বাড়ি করার অধিকার নেই, করতে হলে গ্রামের বাইরে কোথাও গিয়ে থাকতে হবে, যতরাজ্যের নীচু কাজ, ময়লা কুড়নো, রাস্তা খোঁড়া, মোষ-শূয়োর চরানো এইসব কাজ তারা সব করত। যে যার জাতে জন্মাত ওইভাবেই থাকতে হত। বেদ উপনিষদ পুঁথি এসবে লেখা ছিল যার যা অবস্থা তাকে মেনে নেওয়াতেই নাকি মানুষের সুখ।
স্বস্তির মতন অচ্ছ্যুৎ কেউ যদি একবার উঁচু জাতের লোককে ছুঁয়ে ফেলত, তার কপালে গো-বেড়ন লেখা ছিল। একবার উরুভেলা গ্রামে একটি অচ্ছ্যুৎ লোক একজন ব্রাহ্মণকে কি করে যেন ছুঁয়ে ফেলেছিল, তারপর তাকে সবাই মিলে যা মার মারল! আবার কোন ব্রাহ্মণ কি ক্ষত্রিয়কে যদি কোন অচ্ছ্যুৎ জাতে লোক একবার ছুঁয়ে দিত তাহলে সেই ব্রাহ্মণ কি ক্ষত্রিয় অশুচি হয়ে যেত, তারপর তাকে ঢের উপোস আরো কত কিছু করে তবে শুচি হতে হত। মোষ চরিয়ে নিয়ে যাবার সময় স্বস্তিকে খুব সাবধানে যেতে হত, যেন উঁচু জাতের লোকের ছায়া সে না মাড়ায়। স্বস্তির তো একেক সময় মনে হত যে মোষগুলোও বুঝি তার চেয়ে উঁচু জাতের, কারণ মোষ ছুঁলে ব্রাহ্মণের জাত যায় না, স্বস্তিকে ছুঁলে যেত। অচ্ছ্যুৎ লোক, তার হয়ত কোন দোষ নেই, সে কি করে কোন ব্রাহ্মণের গা ছুঁয়ে ফেলেছে, ব্যস, অমনি সবাই মিলে তাকে নির্দয়ভাবে প্রহার করত।
এবার, স্বস্তির সামনে এরকম একজন ঝকঝকে উজ্জ্বল চেহারার মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এঁর আর স্বস্তির এক রকম সামাজিক পরিস্থিতি নয়। এরকম একজন ভদ্র সদাহাস্যময় পুরুষকে স্বস্তি হয়ত ছুঁয়ে ফেললেও ইনি ওর গায়ে হাত তুলবেন না, তবু কি দরকার বাবা, তাই স্বস্তি থমকে দাঁড়িয়ে গেল। স্বস্তির অস্বস্তি দেখে লোকটি নিজেই এক পা এক পা করে স্বস্তির দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন। স্বস্তিও পেছতে লাগল, তবে লোকটির চলন স্বস্তির তুলনায় দ্রুত, চোখের পলকে তিনি তাঁর বাঁ হাত দিয়ে স্বস্তির কাঁধ খামচে ধরলেন। ডান হাত দিয়ে স্বস্তির মাথায় আলতো চাঁটি মারলেন। স্বস্তি কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আজ অবধি তাকে কেউ ওরকম আদর করে গায়ে হাত দেয়নি, তাতেই বা কি, স্বস্তি ভয়ে কাঠ।
“ভয় পেয়ো না বাছা,” তিনি শান্ত স্বরে বললেন।
এ কথা শুনে স্বস্তির ভয় কেটে গেল। সে মাথা তুলে মানুষটির দিকে তাকিয়ে দেখল, তিনি তার দিকে তাকিয়ে হাসছেন। সে একটু থতমত খেয়ে আমতা আমতা করে বলল, “বাবু, আমার আপনাকে বড় ভাল লাগছে।”
লোকটি স্বস্তির চিবুক নিজের হাতে তুলে ধরে বললেন, “আমারো তোমাকে ভাল লেগেছে! তুমি কি কাছেই থাক?”
স্বস্তি কোন উত্তর দিল না। সে তার দুই হাতে লোকটির বাঁহাত ধরে জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, আমি যখন আপনাকে এরকম করে ছুঁয়ে দিচ্ছি, আপনি অশুচি হয়ে যাচ্ছেন না?”
লোকটি হেসে মাথা নেড়ে বললেন, “না বাছা। তুমিও মানুষ, আমিও মানুষ। তুমি আমাকে অপবিত্র করতে পার না। কে কি বলে তাতে কান দিও না।”
তিনি তখন স্বস্তির হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে জঙ্গলের ধারে এলেন। মোষগুলো তখনও চরে বেড়াচ্ছিল। স্বস্তির দিকে চেয়ে তিনি বললেন, “তুমি বুঝি এই মোষগুলোকে চরাও? আর ওই ঘাসের স্তুপটা নির্ঘাত মোষেদের খাবার জন্যে কেটে রেখেছ? তোমার কি নাম? তোমার বাড়ি কি কাছেই কোথাও?”
স্বস্তি খুব নম্র হয়ে উত্তর দিল, “হ্যাঁ বাবু, আমি এই মোষগুলোকে চরাই। আমিই এই ঘাসের বাণ্ডিলটা কেটে রেখেছি। আমার নাম স্বস্তি, আমি নদী পেরিয়ে উরুভেলা গ্রামের বাইরে থাকি। বাবু, আপনার কি নাম? আপনি কোথায় থাকেন? আমাকে একটু বলুন না”
তিনি বললেন, “অবশ্যই। আমার নাম সিদ্ধার্থ, আমার বাড়ি অবশ্য অনেক দূরে। আমি এখন এই জঙ্গলেই থাকি।”
“আপনি কি সাধু?”
সিদ্ধার্থ মাথা নাড়লেন। স্বস্তির ধারণা ছিল যে সাধুরা পাহাড়-পর্বতে ধ্যান করেন।
যদিও তাদের সদ্য সাক্ষাৎ হয়েছে, দু-একটা কথা হয়েছে কি হয়নি, স্বস্তির এঁর সঙ্গে যেন একটি আত্মীয়তা অনুভব করল। উরুভেলাতে আজ অবধি কেউ তার সঙ্গে এঁর মতন করে ভদ্রভাবে, এত উষ্ম আতিথ্যে কথা বলেনি। তার আজ ভারি আনন্দ হল, কি করে যে প্রকাশ করে। সিদ্ধার্থকে যদি সে কিছু উপহার দিতে পারত। তার কাছে তো ফুটো কড়িটিও নেই, এমনকি একটা চিনির টুকরোও নেই যে দেবে। দেবে টা কি? কিছুই নেই, তবুও সাত-পাঁচ না ভেবে খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে বলল,
“বাবু, আমার আপনাকে কিছু একটা দিতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু আমার কাছে তো কিছু নেই, কি যে করি!”
সিদ্ধার্থ স্বস্তির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বললেন, “আছে তো! তোমার কাছে এমন একটা জিনিস আছে যেটা আমার খুব কাজে লাগবে।”
“আমার কাছে আছে? কি আছে?”
সিদ্ধার্থ কুশ ঘাসের গাদাটির দিকে আঙুল তুলে দেখালেন। “মোষেদের জন্যে যে ঘাসের বাণ্ডিলটা তুমি কেটে রেখেছ সেটা দেখছি বড়ই নরম আর সেখান থেকে মিষ্টি গন্ধ বেরোচ্ছে। তুমি যদি তার থেকে কিছুটা আমায় দাও তো আমি গাছের তলায় ধ্যান করার একটা আসন তৈরী করে পেতে বসতে পারি। ওতেই আমার বড় আনন্দ হবে।”
স্বস্তির চোখ চকচক করে উঠল। সে এক দৌড়ে ঘাসের বাণ্ডিলটার কাছে গিয়ে খানিকটা ঘাস তুলে বগলে করে নিয়ে এসে সিদ্ধার্থকে দিল।”
“আপনি এটা নিন। আমি আরো ঘাস কেটে নেবখন।”
সিদ্ধার্থ হাত দুটোকে পদ্মের মতে করে ধরলেন, তারপর উপহারটি গ্রহণ করলেন। করে বললেন, “দেখ, তোমার দেখছি বড়ই করুণা। তোমাকে ধন্যবাদ। এখন এস, খুব দেরী হয়ে যাবার আগে মোষগুলোর জন্য খানিকটা ঘাস কেটে রাখো। যদি সম্ভব হয়, কাল দুপুরে একবার এই জঙ্গলে আমার কাছে এস।”
স্বস্তি মাথা নত করে বিদায় নিল। সে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল যতক্ষণ না সিদ্ধার্থের অবয়ব জঙ্গলে অন্তর্হিত হল। তারপর তার হাঁসুলি নিয়ে সে নদীর তীরে গেল, তার হৃদয় এখন কি এক অজানা উষ্ণতায় ভরে আছে। তখন সদ্য শরৎকাল। নরম ঘাসে তার সদ্য শান দেওয়া হাঁসুলির কোপ পড়তে পড়তে দেখতে দেখতে আরো এক বাণ্ডিল ঘাস সে হই হই করে কেটে ফেলল।
স্বস্তি মোষগুলোকে রামভুলের বাড়ির দিকে নিয়ে গেল, নৈরঞ্জনা নদীর হাঁটুজল পেরিয়ে। বাছুরটা কচি ঘাসের স্বাদ পেয়েছে, যেতে চায় না, তাকে ভুলিয়ে নিয়ে যেতে হল, মাথার ওপর ঘাসের বোঝা এখন আর তার ভারি লাগছে না, স্বস্তি মোষদের সঙ্গে নিয়ে দিব্যি নদী পেরিয়ে গেল।
(চলবে)